আজ বৃহস্পতিবার, নির্বাচনী বন্ড স্কিমের বৈধতার বিরুদ্ধে দায়ের করা পিটিশনে ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালত এই বিতর্কিত স্কিমটিকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করেছে।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের তরফে রায়ে সাফ জানানো হয়, এই প্রকল্পের লক্ষ্য কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াই ও আর্থিক অনুদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হিসাবে তুলে ধরা হলেও, তা কার্যকর নয়। নির্বাচনী বন্ডই কালো টাকা রোখার একমাত্র উপায় নয়।
এই রায়ের মূল বিষয়গুলি:
- নির্বাচনী বন্ড অসাংবিধানিক: সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছে যে নির্বাচনী বন্ড ‘জনগণের প্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১’ এবং ‘ভারতীয় সংবিধানের’ ১৪, ১৯(১)(এ) এবং ২১ ধারার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
- তথ্য অধিকার লঙ্ঘিত: আদালত বলেছে যে নির্বাচনী বন্ড তথ্যের অধিকার লঙ্ঘন করে কারণ এটি রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলের উৎস সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে না।
- বিকল্প ব্যবস্থা: সরকারকে নির্বাচনী তহবিলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা বিবেচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- এসবিআই-এর তথ্য: স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে (এসবিআই) ২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ড সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য সরবরাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ:
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “নির্বাচনী বন্ড অসাংবিধানিক ও বিধিবহির্ভূত। ইলেকটোরাল বন্ডের ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দল ও আর্থিক অনুদানকারীর মধ্যে সুবিধার সম্পর্ক বা কুইড প্রো কিউ ব্যবস্থা তৈরি হতে পারে। ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে তথ্যের অধিকার আবশ্যক। ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রয়োজনীয় তথ্য জানানো জরুরি। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রাজনৈতিক দলগুলিই।”
এই রায়ের গুরুত্ব:
- কালো টাকা রোধ: নির্বাচনী বন্ড বাতিলের ফলে ভোটে কালো টাকার ব্যবহার রোধে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
- স্বচ্ছতা বৃদ্ধি: রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলের উৎস সম্পর্কে আরও স্বচ্ছতা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
- গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা: এই রায় গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াটিকে আরও ন্যায্য ও নিরপেক্ষ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মোটকথা, নির্বাচনী বন্ড বাতিলের ফলে ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই রায়ের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে তা সময়ই বলে দেবে।
আরও পড়ুন: পিএফের সুদ বাড়াল কেন্দ্র, গত ৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ