বিবি ডেস্ক: সপ্তাহের শেষ কেনাবেচার দিনে তীব্র রক্তক্ষরণ ভারতীয় শেয়ার বাজারে। এ দিন ১০০০ পয়েন্টেরও বেশি পড়ে বন্ধ হয়েছে অন্যতম সূচক সেনসেক্স। দিনের শেষে নিফটি-র পতন ১.৭২ শতাংশ। যা চলতি বছরে শেয়ার বাজারকে নেতিবাচক পরিণতির দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
কী কারণে এই তীব্র পতন
বিশ্বমন্দার আশংকা। যা নিয়ন্ত্রণের জন্য মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি রেট বাড়ানোর দিকে ঝুঁকেছে। এর জেরেই এই নিয়ে তৃতীয় দিনের জন্য আন্তর্জাতিক স্টক মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির পদক্ষেপের কারণে পরিস্থিতি বেদনাদায়ক হয়ে উঠতে পারে বলেই আশংকা তাঁদের।
গত বুধবার বেঞ্চমার্ক রেট বাড়িয়েছে ফেড। একই সঙ্গে জোরালো ইঙ্গিত, বছরের শেষ নাগাদ সেই বেঞ্চমার্ক রেট ৪.৪ শতাংশে পৌঁছাবে। ব্রিটেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং নরওয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলিও সুদের হার বাড়িয়েছে। এ দিকে আরও এক দফায় রেপো রেট বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ফেডারেল রিজার্ভের ৭৫ বিপিএস হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের নেতিবাচক প্রতিফলনই দেখা যাচ্ছে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ইকুইটি বাজারগুলিতে।
অন্য দিকে, অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যাপক ভাবে স্থিতিশীল থাকলেও সম্প্রতি ভারতীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে। মার্কিন ডলারের তুলনায় ভারতীয় রুপির দাম পৌঁছেছে ৮১ টাকায়। ফেড রেট বাড়ার পরই ডলারের তুলনায় রুপির দাম সর্বকালের সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। শুধু তাই নয়, ডলার ক্রমশ শক্তিশালী হওয়ার কারণে তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছে অন্যান্য মুদ্রাগুলিও।
সপ্তাহের শেষ দিনে সেনসেক্স-নিফটি
এ দিন বাজার খোলে লাল রঙে। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রায় ১,১০০ পয়েন্টের খাদে গিয়ে পড়ে সেনসেক্স। একটা সময় দিনের শেষে ৫৮,০৯৮-এ থিতু হয় ৩০ স্টকের এই সূচক। অন্য দিকে, নিফটি-তেও প্রায় ২ শতাংশ পতন। ৫০ স্টকের এই সূচক পড়ে গিয়েছিল ১৭,২৯১-এ। তবে শেষমেশ চরম অনিশ্চয়তাকে সঙ্গী করেই বন্ধ হয় ১৭,৩২৭-এ।
বিশ্লেষকদের মতে, ২১ সেপ্টেম্বর মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতি ঘোষণার পরেই বাজার সিদ্ধান্তমূলক প্রবণতা দেখাচ্ছে। এই নেতিবাচক প্রবণতা স্বল্পমেয়াদি হলেও হতে পারে। কিন্তু চলতি বছরের জন্য তা অস্বস্তিকর পরিণতির দিকে যে নিয়ে যাবে না, তা কে বলতে পারে!
আরও পড়ুন: ধাক্কা খেল ভারতীয় অর্থনীতি, বৃদ্ধির হার আরও কমাল এডিবি