এই সপ্তাহে, টানা তৃতীয় ট্রেডিং সেশনে চওড়া পতন ভারতীয় শেয়ার বাজারের মূল সূচকগুলিতে। বিনিয়োগকারীদের বিক্রির হিড়িক এবং বাজারের মেজাজ খারাপ হওয়ার কারণে, সেনসেক্স প্রায় হাজার পয়েন্ট এবং নিফটি ৩০০ পয়েন্টের বেশি নীচে নেমে যায়। মিড ক্যাপ সূচকে পতনের প্রবণতা আজও অব্যাহত ছিল এবং এনএসই মিড ক্যাপ সূচকও ৯০০ পয়েন্টে পিছলে গেছে।
এ দিনের লেনদেন শেষে, বিএসই সেনসেক্স ৯০০ পয়েন্ট খুইয়ে ৬৩,১৪৮-এ এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি ২৬৫ পয়েন্ট হারিয়ে ১৮,৮৫৭-তে বন্ধ হয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জের পরিসংখ্যান বলছে, এই পতনের কারণে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়েছে ৩ লক্ষ কোটি টাকা।
এ দিনের ট্রেডিং সেশনে ব্যাঙ্কিং সেক্টরের স্টকগুলিতে শক্তিশালী প্রফিট বুকিং দেখা গেছে। যে কারণে নিফটি ব্যাঙ্ক ৫৫২ পয়েন্ট বা ১.২৯ শতাংশের পতনের সঙ্গে ৪২,২৮০ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে। এ ছাড়া অটো, আইটি, ফার্মা, এফএসিজি, মেটাল, এনার্জি, কনজিউমার ডিউরেবলস, হেলথ কেয়ার, তেল ও গ্যাস সেক্টরের স্টকের দাম কমেছে।
মিড ক্যাপ এবং স্মল স্টকের পতনের প্রবণতা আজও অব্যাহত রয়েছে। মিড ক্যাপ সূচক ১.১৬ শতাংশ বা ৪৪৮ পয়েন্ট কমে ৩৮,১১৬ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে, যেখানে স্মল ক্যাপ সূচক ৪২ পয়েন্ট কমে ১২.৯৩০ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে।
এ দিনের পতনের কারণে বিএসই বাজার মূলধন আবারও কমেছে। আজ বাজারের সমাপ্তিতে, বিএসই-র মার্কেট ক্যাপ ৩০৬.২১ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যেখানে গত ট্রেডিং সেশনে এটি ছিল ৩০৯.৩৩ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ আজকের বাণিজ্যে বিনিয়োগকারীরা প্রায় ৩.১২ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
মার্কিন বন্ডের ফলন ৫ শতাংশ স্পর্শ করায় ইতিমধ্যেই শেয়ার বাজারে বিক্রির হিড়িক শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে, কয়েক দিন ধরেই অপেক্ষাকৃত কম দামে কেনা শেয়ার একটু উপরে বেচে দেওয়ার অপেক্ষায় ছিল বাজার। মার্কিন বন্ডের রেকর্ড ফলন, ইজরায়েল-হামাস সংঘাত ইত্যাদিকে সামনে রেখে সেই সুযোগটাও মিলে যাচ্ছে। তবে এটা কোনো সুদূরপ্রসারী আতঙ্কের কারণ হবে না বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।
পাশাপাশি, সাম্প্রতিক একটি পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অক্টোবর মাসে ভারতীয় ইক্যুইটি থেকে ১২,০০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতে এফপিআই-এর বিনিয়োগের গতিপথ বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, সুদের হারের গতিশীলতা এবং ইজরায়েল-হামাস সংঘাতের পরিস্থিতি ও তীব্রতা থেকে প্রভাবিত হবে। ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এ ধরনের ঘটনাগুলি ভারতের মতো উদীয়মান বাজারে বিদেশি পুঁজির প্রবাহকে বরাবরই প্রভাবিত করে।
আরও পড়ুন: সেনসেক্সে ৫০০ পয়েন্টেরও বেশি পতন, শেয়ার বাজারে বিক্রির হিড়িক কী কারণে