ক্রমবর্ধমান সুদের হার থেকে ঋণগ্রহীতাদের জন্য বড়ো স্বস্তি নিয়ে এসেছে ২০২৩-২৪ আর্থিক বছর। তিন দিনের মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকের শেষ দিনে রেপো রেট নিয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় বৈঠকে মূল সুদের হারকে আবারও ৬.৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
গত এপ্রিলের বৈঠকেও রেপো রেট অপরির্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আরবিআই। স্বাভাবিক ভাবে, ফের এক বার সেই সিদ্ধান্তের পুনরাবৃত্তি ঋণগ্রহীতাদের জন্য বড়োসড়ো স্বস্তি। এর আগে, ২০২২ সালের মে মাসের পর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কয়েক দফায় ২৫৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছিল রেপো রেট।
সুদের হার কি কমবে?
এরই মধ্যে ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, রেপো রেট বৃদ্ধিতে পরপর দুটি বিরতি কি বর্তমান ক্রমবর্ধমান সুদের হার চক্রের সমাপ্তির জন্য একটি সংকেত? শীঘ্রই কি সুদের হার কমার সম্ভাবনা আছে?
আরবিআই-এর প্রাথমিক দায়িত্ব হল খুচরো মূল্যস্ফীতিকে ২ থেকে ৬ শতাংশের নিম্ন স্তরে বেঁধে রাখা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্নিত হওয়ার কারণে সুদের হার বৃদ্ধি চক্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণটি ছিল খুচরো মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি। ২০২২ সালের মে মাসেই এই বর্তমান চক্রের প্রথম রেপো রেট বৃদ্ধি করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। সেসময় খুচরো মূল্যস্ফীতি ছিল শীর্ষে (৭.৭৯ শতাংশ)। আক্রমনাত্মক রেপো রেট বৃদ্ধি ঘটিয়ে চলতি বছরের এপ্রিলে প্রথম বারের মতো মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনে আরবিআই। এর ফলে পর দু’বার সুদের হার বৃদ্ধি ঘটানোর আর প্রয়োজন হয়নি।
রেপো রেট এবং ইএমআই
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এই ঘোষণা ঋণগ্রহীতাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। কারণ গত দু’বছর ধরে আরবিআই যতবার রেপো রেট বাড়িয়েছে, অন্য ব্যাঙ্কগুলিও তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঋণের সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। এর ফলে গাড়ি, বাড়ি, পার্সোনাল লোনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি ইএমআই গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এমন পরিস্থিতিতে রেপো রেট আরও বাড়ানো হলে তা মধ্যবিত্ত শ্রেণির পকেটে বড় ধাক্কা হতো। তবে আরবিআই আপাতত তেমন কোনো সিদ্ধান্তে গেল না। এপ্রিল মাসের মতোই এ মাসেও রেপো রেট রাখা হল অপরিবর্তিত। ফলে ঋণগ্রহীতাদের মাসিক কিস্তি বা ইএমআই যে বাড়ছে না তা এক প্রকার নিশ্চিত।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্কে কয়েন জমা করার কোনো সীমা আছে কি? আরবিআই নির্দেশিকা কী বলছে