মূল মুদ্রাস্ফীতি এখনও উচ্চ স্তরে। বাজারগুলিকে আরও শক্তশালী করার দরজা খোলা রেখে ফের এক বার রেপো রেট (repo rate) বাড়াল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI)। গত বছরের মে মাস থেকে এই নিয়ে টানা ষষ্ঠ বার বাড়ল কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মূল সুদের হার।
ক’দিন ধরেই বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন আবারও রেপো রেট বাড়াতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। সোমবার থেকে তিন দিনের বৈঠকে বসেছিল আরবিআই-এর মুদ্রানীতি কমিটি (MPC)। অনুমান মতোই ২৫ বেসিস পয়েন্ট (bps) বৃদ্ধি করা হয়েছে রেপো রেট।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তিন সদস্য এবং তিনজন বহিরাগত সদস্য নিয়ে গঠিত মুদ্রানীতি কমিটি। জানা গিয়েছে, এমপিসি-র ছ’জন সদস্যের মধ্যে চার জনই সুদের হার বৃদ্ধির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এর পরই রেপো রেট ৬.৫০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।
এসডিএফ (স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি) হার ৬ শতাংশ থেকে ৬.২৫ শতাংশে সামঞ্জস্য করা হয়েছে। এমএসএফ (মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি) হার ২৫ বিপিএস বেড়ে ৬.৭৫ শতাংশ হয়েছে। বলে রাখা ভালো, মূল্যবৃদ্ধি, আর্থিক মন্দা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এই পদক্ষেপের রেশ ধরেই সুদের হার বাড়ানোর পথ ধরছে অন্য ব্যাঙ্কগুলিও।
প্রসঙ্গত, ভারতের খুচরো মূল্যস্ফীতি এক বছরের সর্বনিম্নে নেমে এসেছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। টানা দ্বিতীয় মাসে ৬ শতাংশের নীচে ছিল মূল্যস্ফীতি। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি আরও কমতে পারে। ভারত-সহ বৈশ্বিক পর্যায়ে মূল্যস্ফীতির হার কমবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আরবিআই নিজের মুদ্রাস্ফীতির অনুমান কমাবে। এর ফলে বৈশ্বিক পণ্যের দাম এবং দেশীয় খাদ্যের দাম কমবে।
এ দিন নতুন সুদের হার ঘোষণা করার সময় আরবিআই গভর্নর বলেন, “কয়েক মাস আগে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এখন অতটা ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছে না। প্রধান অর্থনীতিতে বৃদ্ধির সম্ভাবনা উন্নত হয়েছে, যখন মুদ্রাস্ফীতি নিম্নমুখী হয়েছে। যদিও প্রধান অর্থনীতিতে এখনও লক্ষ্যমাত্রার উপরে রয়েছে। পরিস্থিতি আদতে অনিশ্চিত রয়ে গেছে”।
প্রসঙ্গত, যে হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয় তাকে রেপো রেট বলা হয়। আবার বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যে হারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে ঋণ দেয় তাকে বলা হয় রিভার্স রেপো রেট।
সাধারণত, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের রেপো রেট কমানোর পরই বিভিন্ন ব্যাঙ্কগুলি নিজেরে সুদের হারে পরিবর্তন নিয়ে আসাটাই রীতি। ফলে রেপো রেট বাড়লে তার সরাসরি প্রভাব এসে পড়ে ঋণ শোধের প্রক্রিয়ায়। ঠিক এই কারণেই রেপো রেট বৃদ্ধি পেলে বাড়ি কিংবা গাড়ি কেনার ইএমআই বেড়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: কলকাতা-সহ দেশের ৮টি বড়ো শহরে বেড়েছে আবাসনের দাম