মেলেনি নতুন বরাত, পড়ে আছে ২০০০ কোটির পণ্য, ধাক্কা খেল চামড়ার পণ্য রফতানি

Tannary

বিবি ডেস্ক: আমেরিকা ও ইউরোপ ভারতীয় চর্মশিল্পের (Tannery Industry) অন্যতম প্রধান দুই রফতানি বাজার। শিল্প সূত্রের খবর, বিভিন্ন ধরনের চামড়ার ব্যাগ, ওয়ালেট, জুতো, শিল্পে ব্যবহৃত গ্লাভস বিক্রি হয় সেখানে। সিএলই-র (CLE) পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান রমেশ জুনেজা জানান, গত বছর পুজোর মরসুম থেকে এপ্রিল-মে পর্যন্ত ভাল বরাত আসছিল। এপ্রিল-মে মাসেরগুলি সরবরাহের কাজ চলেছে প্রায় অগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু তার পর নতুন বরাত মেলেনি। আগের বরাতের যে সব পণ্য জাহাজপথে পাঠানোর কথা ছিল, অগস্টের পরে ক্রেতারা সেগুলি নিতে চাইছেন না। বরং সময়সীমা ফেব্রুয়ারিতে পিছোতে বলছেন। সিএলই-র হিসাবে, পূর্বাঞ্চল থেকে বছরে ৭০০০ কোটি টাকার চামড়ার পণ্য রফতানি হয়। এর মধ্যে অন্তত ২০০০ কোটি টাকার পণ্য পড়ে রয়েছে।

কোথায় সমস্যা

অতিমারির (Pandemic) ধাক্কা কাটিয়ে আর পাঁচটা ব্যবসার মতোই ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল দেশের চর্মশিল্প (Tannery Industry)। কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার (World Economy) আশঙ্কা এবং নতুন করে গতি পাওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আঁচে ফের ধাক্কা খেল তারা। কার্যত থমকে গেল সংস্থাগুলির রফতানি ব্যবসা। এপ্রিল-মে মাসের পরে বিদেশ থেকে নতুন কোনও বরাত মেলেনি, দাবি কাউন্সিল অব লেদার এক্সপোর্টের (সিএলই)। পুরনো বরাতের যে অংশ সরবরাহের কথা অগস্টের পরে, সেগুলিরও বেশিরভাগটাই আপাতত স্থগিত রেখেছেন ক্রেতারা। ফলে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চলে প্রায় ২০০০ কোটি টাকার পণ্য পড়ে রয়েছে। টান পড়ছে শিল্পের আয়ে। রফতানির জন্য নেওয়া ঋণের সুদে তাই ভর্তুকি বাড়াতে কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানিয়েছে তারা।

কেন পণ্য রফতানি হচ্ছে না

সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, যুদ্ধের অনিশ্চয়তার পাশাপাশি চড়া মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশের বিপুল সুদ বৃদ্ধি আর্থিক বৃদ্ধিকে এমন টেনে নামাচ্ছে যে, বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার মুখে। রাশিয়ার হুঁশিয়ারিতে গ্যাসের জোগান নিয়ে সংশয় বেড়েছে। আশঙ্কা দাম বৃদ্ধিরও। রমেশের বক্তব্য, উন্নত দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে আগে গৃহস্থকে জ্বালানি জোগানে জোর দেওয়া হচ্ছে, তার পরে শিল্প। ফলে শিল্পে চামড়ার পণ্য, বিশেষত গ্লাভসের চাহিদা কমছে। সাধারণ ক্রেতাও অত্যাবশ্যক পণ্য কেনাকাটায় অগ্রাধিকার দিচ্ছেন বলে চামড়ার বহু জিনিস কম বিক্রি হচ্ছে।

কী চাইছে চর্মশিল্প

চর্মশিল্প সূত্র বলছে, বরাত কমায় ভারতে চামড়ার পণ্যের উৎপাদন কমছে। কারখানাগুলি উৎপাদন চালিয়ে গেলেও রফতানি কমায় আর্থিক চাপ বাড়ছে। রমেশ জানান, রফতানিকারী সংস্থাগুলি বিভিন্ন ধরনের পণ্যের ভিত্তিতে ঋণের সুদে ৩%-৫% হারে ভর্তুকি পায়। অর্থ মন্ত্রকের কাছে তা বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: কমছে চাহিদা, হু হু করে পড়ছে দাম, তবুও চিন্তার কিছু দেখছে না ইস্পাত শিল্প

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.