কমছে আমদানি, বাড়ছে সোনায় লগ্নি, বেড়েই চলেছে হলুদ ধাতুর দাম

gold

গত বছরের প্রায় গোড়া থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia Ukraine War) এবং তার ফলে অর্থনীতিতে (Economy) তৈরি হওয়া আশঙ্কা যুঝতে সোনার দিকে ঝুঁকেছিলেন মানুষ। তার মধ্যেই আবার ভারত, আমেরিকা-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মূল্যবৃদ্ধি যুঝতে টানা সুদ বাড়াচ্ছিল শীর্ষ ব্যাঙ্কগুলি। ফলে ঋণপত্রের দাম কমায় তার আকর্ষণ বেড়েছিল। তাই সোনা থেকে টাকা তুলে সেখানে সরাচ্ছিলেন লগ্নিকারীরা। এখন হচ্ছে উল্টো। বিভিন্ন দেশে জিনিসের দাম কমার ইঙ্গিত মিলছে। ফলে ভবিষ্যতে সুদ বাড়লেও, বৃদ্ধির গতি কমতে পারে বলে ধারণা লগ্নিকারীদের। যে কারণে তাঁরা ঋণপত্র থেকে সোনায় ফিরছেন। তার জেরে ধাতুটির চাহিদা বাড়ায় চড়ছে তার দাম।

কত হল সোনার দাম

ক্রেতা-বিক্রেতার কাঁপুনি বাড়িয়ে শুক্রবার ৫৭,০০০ টাকা হয়েছিল পাকা সোনার দাম। এক দিনের মধ্যে সেই দর ৫৭,৫০০ টাকার কাছে পৌঁছে তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও গভীর করল। চিন্তা বাড়াল হলমার্কযুক্ত সোনার গয়নার দামও। শহরে যা এই প্রথম ছাড়িয়েছে ৫৫,০০০ টাকা। গয়নার কারিগর থেকে সাধারণ মানুষ, সকলের এখন একটাই প্রশ্ন আর কত চড়বে দাম! কত দিনে স্বস্তি দেবে সোনা। যদিও সে বিষয়ে খুব একটা আশ্বাস দিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। বরং তাঁদের আশঙ্কা, বিশ্ব বাজারে তার দামের যা হাল, তাতে আগামী কয়েক দিনও নতুন নতুন রেকর্ড গড়তে পারে এই ধাতু। শনিবার বিশ্ব বাজারে পাকা সোনা ছিল আউন্সে ১৯২১.১০ ডলার। জানুয়ারিতে এখনও পর্যন্ত যা বেড়েছে ৯৬.৬০ ডলার।

কতটা কমল আমদানি

দাম বৃদ্ধির জেরে কমেছে সোনায় আমদানিও। ২০২১ সালে মোট ১০৬৮ টন সোনা আমদানি করেছিল ভারত। কিন্তু সূত্রের খবর, গত বছরে তা প্রায় ৩৪ শতাংশ কমে ঠেকেছে ৭০৬ টনে। ডিসেম্বরে এসেছে ২০ টন সোনা। ২০২১ সালের শেষ মাসে ওই অঙ্ক ঠিল ৯৫ টন। বাজার মহলের মতে, আমদানি কম হওয়ায় এই খাতে ভারতের খরচ কিছুটা কমেছে ঠিকই। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে চড়া দাম থাকলে এবং ডলারের সাপেক্ষে টাকার দর না নামলে তা খুব বেশি হেরফের হবে না। ফলে মিলবে না সোনার আমদানি কমার সুফল।

কলকাতায় কত দাম

এ দিন কলকাতায় ৪৫০ টাকা বেড়ে ১০ গ্রাম পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) হয়েছে ৫৭,৪৫০ টাকা। হলমার্ক গয়না (Hallmark Gold) ১০ গ্রামে ৫৫,৩০০ টাকা। সোনার বাজারের বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির (World Economy) প্রেক্ষিতে এখন এই দর কমার সম্ভাবনা কম। বরং তা আরও বাড়তে পারে। এ জন্য বিশেষত আমেরিকার ঋণনীতির (Americas Debt Policy) দিকে নজর রাখার কথা বলছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের (Senco Gold and Diamonds) ম্যানেজিং ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেন বলেন, ‘‘ঋণপত্র আকর্ষণ হারালে সোনায় লগ্নি আরও বাড়বে। তার উপরে বিয়ের মরসুম শুরু হচ্ছে। ফলে সব মিলিয়ে হলুদ ধাতুর দাম এখন বাড়তে থাকবে বলেই ধারণা।’’

আরও পড়ুন: মাত্র ২ সপ্তাহ, ভারতীয় শেয়ার বাজার থেকে উধাও ১৫ হাজার কোটির বিদেশি বিনিয়োগ

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.