বিবি ডেস্ক: দেশে দামি জিনিসপত্রের চাহিদা বেড়েই চলেছে। গাড়ি থেকে রং, ছবিটা সব ক্ষেত্রেই এক। অথচ ঠিক উল্টো ছবিটা দেখা যাচ্ছে কম দামি পণ্যের ক্ষেত্রে। সেই বাজার ক্রমেই চলেছে তলানির দিকে। আর এই সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি চিন্তা বাড়াচ্ছে শিল্পমহলের।
কর সংগ্রহ-সহ বিভিন্ন পরিসংখ্যান পেশ করে কেন্দ্র অনেক দিন ধরেই দাবি করে আসছে, অতিমারির পরে ভারতের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। অথচ দামি জিনিসপত্রের চাহিদা বাড়লেও কম দামি পণ্যের চাহিদা যে আগের জায়গায় পৌঁছয়নি, তা স্পষ্ট হয়েছে বিভিন্ন সমীক্ষায়। যা নিয়ে উদ্বেগ ধরা পড়ল শিল্পমহলের কথাতেও।
মন্ত্রীর দাবি
সম্প্রতি বেঙ্গল চেম্বারের আর্থিক বিষয়ক আলোচনায় কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেন, ‘‘কৃষি থেকে উৎপাদন, দেশে সব ক্ষেত্রের অবস্থাই এখন ভাল। ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি (Indian Economy)। এ বার আমরা তৃতীয় স্থানের দিকে এগোচ্ছি।’’
শিল্পমহলের দাবি
মারুতি সুজ়ুকি (Maruti Suzuki) ইন্ডিয়ার বিপণন বিভাগের সিনিয়র এগ্জ়িকিউটিভ অফিসার শশাঙ্ক শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘ছোট কম দামি গাড়ি বিক্রিতে খরা। এসইউভি-সহ দামি গাড়ির চাহিদা বেড়েছে।’’ একই কথা জানিয়ে বার্জার পেন্টসের (Berger Paints) এমডি অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘দামি রংয়ের বাজার বাড়ছে। কিন্তু কম দামি রংয়ের চাহিদা তলানিতে।’’
এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সভার শেষে শ্রীবাস্তব জানান, শিল্পের মুনাফা বাড়লেও সাধারণ চাকরিজীবীদের আয় কমেছে। গাড়ির ক্ষেত্রে ছোট-বড় সব গাড়ির দামই বেড়েছে। ফলে যাঁদের অর্থের জোর আছে তাঁদের দামি গাড়ি কিনতে সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু পিছিয়ে যাচ্ছেন কম দামি গাড়ির সম্ভাব্য ক্রেতারা।
চিন্তা কোথায়
অর্থনীতির মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদেশি মুদ্রা ভান্ডারও। ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞ তমাল বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, ভারত যদি আর্থিক সঙ্কটের মোকাবিলা সফল ভাবে করতেই পারে তা হলে মূল্যবৃদ্ধি মাথা তুলছে কেন? রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককেই বা কেন সুদের হার বাড়াতে হচ্ছে? এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান অতনু চক্রবর্তীর অবশ্য ব্যাখ্যা, ভারতকে বিপুল তেল আমদানি করতে হয়। তবে অন্য অনেক দেশের তুলনায় ভারতের আর্থিক হাল ভাল।
আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন নন-এগ্জ়িকিউটিভ চেয়ারম্যান কে ভি কামাথ-সহ অনেক বিশেষজ্ঞেরই বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধিতে ৫০ শতাংশের বেশি দায়ী খাদ্যপণ্যের দাম। যাকে সুদ বাড়িয়ে ঠেকানো সম্ভব নয়। স্টেট ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ সৌম্যকান্তি ঘোষের মতে, বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার এখনও উদ্বেগজনক জায়গায় নামেনি। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদের সদস্য সচিন চতুর্বেদী জানান, কৃত্রিম ভাবে টাকার দামের পতন ঠেকাতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক কোনও পদক্ষেপ করবে না।
আরও পড়ুন: সুদের হার বাড়াল এসবিআই এবং অন্যান্য ব্যাঙ্ক, জানুন ইএমআই কতটা বাড়বে