দাম বেড়েছে চিনির, রফতানিতে জটিলতা

নয়াদিল্লি: বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে চিনি সরবরাহ করার চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনা করছে ভারতীয় চিনিকলগুলি। সরকার এ বছরের রফতানি কোটা কমানোর পরে চিনির দাম বেড়েছে। চুক্তিমতো সরবরাহ করার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করছে তারা।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি রফতানিকারক দেশ ভারত। এ দেশের মিলগুলি সরবরাহের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করায় বিশ্ববাজারে চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। চলতি মাসের শুরুতে ৬০ লক্ষ টন চিনি রফতানির কোটা অনুমোদন করে নয়াদিল্লি। তবে তার আগেই, আগস্টের শেষের দিকে চিনি বিক্রি শুরু করে মিলগুলি। রফতানির জন্য প্রায় ২০ লক্ষ মিলিয়ন টন চিনি সরবরাহের চুক্তি স্বাক্ষর করে তারা।

কোটা কমিয়েছে কেন্দ্র

তবে জটিলতা দেখা যায় সরবরাহে। রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, মুম্বই-ভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সংস্থা জানিয়েছে, কয়েকটি মিল আগেই চুক্তি স্বাক্ষর করলেও পরিমাণ মতো চিনি সরবরাহ করতে অক্ষম। ফলে তাদের খেলাপি হওয়ার আশংকা রয়েছে। ক্রেতারা যদি ক্রয়মূল্য না বাড়ায় সমস্যা দেখা দেওয়াটাই স্বাভাবিক। ইতিমধ্যেই রফতানি চুক্তিগুলি পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে অথবা খেলাপি হয়েছে বলে দাবি করেছে কমপক্ষে চারটি মিল সূত্র।

দু’মাস আগে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্র এবং প্রতিবেশী কর্নাটকের মিলগুলি প্রতি টন প্রতি ৩৪ হাজার টাকা (৪২০ মার্কিন ডলার) দরে চিনি বিক্রি করেছি। কিন্তু এখন দাম টন প্রতি ৩৭ হাজার টাকার উপরে চলে গেছে। এ ভাবে দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় কিছু মিল চুক্তি থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে বলেও জানিয়েছে মুম্বই-ভিত্তিক একটি ডিলার। ডলারের তুলনায় টাকার দামে পতনের কারণই দাম বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তার উপর ভারত সরকার ৬০ লক্ষ টন রফতানি অনুমোদন করার পরে বিশ্ববাজারেও চিনির দাম বেড়েছে। কারণ, গত বছর এই কোটার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১০ লক্ষ মিলিয়ন টন।

বিপাকে ট্রেড হাউস

নয়াদিল্লি-ভিত্তিক এক ডিলার সংবাদ সংস্থাকে জানায়, “মিলগুলির সঙ্গে ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করার পরে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে চিনি বিক্রি করেছে ট্রেড হাউসগুলি। তারা (ট্রেড হাউস) এখন বিপাকে পড়েছে। কারণ, তারা মিলের মতো পুনঃআলোচনা করতে পারে না বা কথার খেলাপও করতে পারে না। তাদের সুনাম বজায় রাখতে তাদের এই চুক্তিতে লোকসান গুনতে হবে”। শুধু তাই নয়, মহারাষ্ট্রের মিলগুলি খেলাপি হওয়ার কারণে ট্রেড হাউসগুলি উত্তরপ্রদেশের মিলগুলি থেকে ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে। জানা গিয়েছে, নভেম্বর থেড়কে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪০ লক্ষ মিলিয়ন টন চিনি রফতানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারতীয় মিলগুলি।

মুম্বই-ভিত্তিক ডিলার জানিয়েছে, সাম্প্রতিক দাম বৃদ্ধির পরেও ভারতীয় চিনি এখনও বিশ্বে সবচেয়ে সস্তা। ভারত প্রধানত ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, ইরাক, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং আফ্রিকান দেশগুলিতে চিনি রফতানি করে।

আরও পড়ুন: অনলাইনে আয়কর জমা দেবেন? এই ব্যাঙ্কগুলির অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার আগে সচেতন হোন

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.