নয়াদিল্লি: প্রতিবেশী দেশ চিনে নতুন করে করোনা আতঙ্ক। তবে এ সব নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই বলে জানালেন সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (SII)-র সিইও আদর পুনাওয়ালা (Adar Poonawalla)। বুধবার তিনি বলেন, “ভারতের টিকাকরণ কভারেজ এবং ট্র্যাক রেকর্ড অনেক ভালো। যে কারণে জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই”।
কেন ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই
পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকার এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের নির্ধারিত নির্দেশিকাগুলি মেনে চলার জন্য জনগণকে অনুরোধ করেন সিরাম সিইও। এ দিন একটি টুইটে তিনি লেখেন, “চিনে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির যে খবর আসছে, তা উদ্বেগজনক। তবে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই। আমাদের খুব ভাল ভ্যাকসিনেশন কভারেজ হয়েছে এবং রেকর্ড করেছে। আমরা অবশ্যই ভারত সরকার এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের উপর ভরসা রাখব এবং বিধিনিষেধ মেনে চলব।”
একই সঙ্গে তিনি জানান, “চিনের করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নীতি সঠিক নয় বলে মনে হচ্ছে। বিশেষত, তাদের ভ্যাকসিন ভাল নয় এবং তারা ভাল ভ্যাকসিন নিতে অথবা নিজেদের ভ্যাকসিন আরও উন্নত করতে অস্বীকার করেছে।”
রাজ্যগুলিকে চিঠি কেন্দ্রের
চিনের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শীতেই করোনার নতুন স্ফীতি আছড়ে পড়তে পারে। পুরো ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় সরকার। INSACOG নেটওয়ার্কের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ভ্যারিয়েন্টগুলি চিহ্নিত করতে পজিটিভ নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং বাড়ানোর জন্য সমস্ত রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রক।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব রাজেশ ভূষণ সমস্ত রাজ্যকে চিঠিতে লিখেছেন, “জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কোরিয়া, ব্রাজিল এবং চিনে আকস্মিকভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, INSACOG নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভ্যারিয়েন্টগুলি চিহ্নিত করার জন্য আক্রান্তের নমুনার পুরো জিনোম সিকোয়েন্সিং তৈরি করা অপরিহার্য”।
রাজ্যগুলির উদ্দেশে চিঠিতে তিনি আরও লেখেন, “এই ধরনের অনুশীলন দেশে যদি নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব ঘটে, তা সনাক্তকরণ সক্ষম করবে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা নেওয়ার সুবিধাও মিলবে”।
কেন্দ্র বলেছে, সমস্ত পজিটিভ রিপোর্টের নমুনা প্রতিদিন সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে ম্যাপ করা INSACOG জিনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাবে পাঠানো উচিত।
কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, এখন আবার প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষ নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হচ্ছেন এক সপ্তাহে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ভারতে নতুন করে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১১২। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩,৪৯০-এ নেমে এসেছে।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়ান সার্স-কোভ-২ জিনোমিক্স কনসোর্টিয়াম বা INSACOG, কোভিড-১৯ ভাইরাসের জিনোমিক বৈচিত্র্য পরীক্ষার জন্য ৫০টিরও বেশি পরীক্ষাগারের একটি কনসোর্টিয়াম। জিনোম সিকোয়েন্সিং হল একটি কৌশল যা নতুন ভাইরাস স্ট্রেনের বৈশিষ্ট্যগুলি সনাক্ত করতে এবং বোঝার জন্য ব্যবহৃত হয়।
বৈঠক কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
ভারতে নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে করোনা সংক্রমণ। কিন্তু উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা ব্রাজিলের মতো দেশে নতুন করে উদ্ভূত পরিস্থিতি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগাম ব্যবস্থা নিয়ে রাখছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ ব্যাপারে রাজ্যগুলির উদ্দেশে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। পাশাপাশি সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বুধবারই বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
বৈঠক শেষের পরে মনসুখ টুইটারে লেখেন, “কোভিড এখনও চলে যায়নি। বিশ্বের বেশ কিছু দেশে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সেই কারণে, পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আধিকারিক এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করলাম। নজরদারি বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়ার কথা বলেছি। যে কোনও পরিস্থিতি সামলাতে আমরা প্রস্তুত”।
আরও পড়ুন: জানুয়ারি মাসে ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে ১৪ দিন, রইল পূর্ণাঙ্গ তালিকা
Discover more from banglabiz
Subscribe to get the latest posts sent to your email.