ভারত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চিনা অ্যাপ, কী ভাবে

currency

নয়াদিল্লি: ভারত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে চিন থেকে পরিচালিত অ্যাপগুলি। ঋণ পরিষেবা এবং বেটিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত এই অ্যাপগুলি সম্পর্কে জোরালো তথ্য উঠে এসেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)-র হাতে।

শিকড় অনেক গভীরে

বিভিন্ন অ্যাপগুলি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের সহায়তায় ভারত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে ওই অ্যাপগুলি। যে কারণে ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (FIU)-এর মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়নি।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, “চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের সাহায্যে, প্রাথমিক ভাবে ভারতীয় ডিরেক্টদের কোম্পানিগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে পরে চিনা নাগরিকরা ভারতে এসে ওই সংস্থাগুলিতে ডিরেক্টর পদ গ্রহণ করেছিলেন”।

তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এ ধরনের সংস্থাগুলি ভারতীয়দের জাল নথি ব্যবহার করে। সংস্থার পরিচালনমণ্ডলীতে রাখা হয় ভারতীয়দের। যাতে বিধিনিষেধ এড়ানো সম্ভব হয় সহজেই। কিন্তু এ ধরনের সংস্থার প্রকৃত পরিচালক এবং নিয়ন্ত্রক আদতে কোনো না কোনো চিনা নাগরিক।

ইডি তদন্তে জানা গিয়েছে, কিছু চিনা নাগরিক অবৈধ ভাবে, বেনামে একাধিক ভারতীয় সংস্থাকে ভাসিয়ে দিয়েছে এ দেশে। হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করেছে এবং তাদের চিনে পাচার করেছে। এফআইইউ কোনো ভাবে দেশ থেকে এই অর্থ পাচারের ঘটনাটি ধরতে পারেনি।

ক্রমশ বেড়ে চলা উদ্বেগের কারণে ভারতে লোন, ডেটিং এবং বেটিং সম্পর্কিত কয়েকশো চিনা নিয়ন্ত্রিত মোবাইল অ্যাপের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের চিনা-নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্তের সময়, ইডি ঋণ, বাজি এবং ডেটিং সম্পর্কিত শতাধিক অ্যাপ খুঁজে পেয়েছে, যা চিন থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। ইডি সূত্রে খবর, শুধুমাত্র বেটিং অ্যাপগুলিই ১,৩০০ কোটি টাকা আয় করেছে।

নজরে পেমেন্ট গেটওয়ে সংস্থা

চিনে অবৈধ অর্থ স্থানান্তরের জন্য দু’বছর আগে এইচএসবিসি ব্যাঙ্কে ৪৭ কোটি টাকা ফ্রিজ করে দেওয়ার পরে, এই উচ্চ-মূল্যের লেনদেনগুলিকে রিপোর্ট না করার জন্য পেটিএম (Paytm), ক্যাশফ্রি (Cashfree) এবং রেজারপে (Razorpay)-সহ পেমেন্ট গেটওয়েগুলির বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে ইডি।

ইডি সূত্র উদ্ধৃত করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, “অনলাইন বেটিংয়ের মতো নিষিদ্ধ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়া ছাড়াও, অনলাইন ওয়ালেটের উপর নির্ভরশীল সংস্থাগুলির এই নেটওয়ার্ক এবং তাদের শিথিল নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা হাওয়ালা লেনদেনের জন্যও ব্যবহার করা হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে”।

ইডি বলেছে, “এ ধরনের সংস্থাগুলি পেমেন্ট গেটওয়ে/ব্যাঙ্কের সঙ্গে থাকা বিভিন্ন মার্চেন্ট আইডি/অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নিজেদের সন্দেহজনক/অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছে”। সেই সূত্র ধরেই “রেজারপে প্রাইভেট লিমিটেড, ক্যাশফ্রি পেমেন্টস, পেটিএম পেমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড”-এ অফিসে সাম্প্রতিক তল্লাশি।

আরও পড়ুন: শুরুতেই ধাক্কা খেল বিক্রি, এক বিশেষ সময়ের দিকে তাকিয়ে দিন গুনছে গাড়ি বাজার

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.