নয়াদিল্লি: ব্যবসা-বাণিজ্যে উন্নতি। ডিসেম্বরে গতি পেয়েছে ভারতীয় অর্থনীতি। আগের মাসে মন্দার লক্ষণ ছিল স্পষ্ট। সেই জায়গা থেকে এই পরিবর্তনকে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত বলেই ধরে নিচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল।
ভারতীয় অর্থনীতির পারফরম্যান্স
পরিষেবা ক্ষেত্রের নতুন ব্যবসাগুলির প্রসার ঘটেছে সাম্প্রতিক সময়ে। কর সংগ্রহের পরিমাণও বেড়েছে। সবমিলিয়ে প্রত্যাশা বাড়ছে। বিশেষ করে করোনা মহামারির কারণে অর্থনীতিতে জোর ধাক্কা লেগেছিল। তবে ২০২২-এ সেই অবস্থার উন্নতি হয়েছে অনেকখানি। নতুন বছরে সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও শক্তিশালী হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট। যেখানে এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া বছরে বিশ্বব্যাপী গতিতে ভারতের বৃদ্ধির সম্ভাবনা তুলে ধরতে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। তবে এশিয়ার বেশ কিছু উন্নত দেশের অর্থনীতির সঙ্গে ভারতীয় অর্থনীতির গতিমুখ বিপরীত। ওই দেশগুলি অর্থনীতি মন্দার মুখোমুখি হলেও এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির পারফরম্যান্স সেই তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে।
উৎপাদন, পরিষেবায় বৃদ্ধি! হ্রাস রফতানি
তবে সামনের দিকে এগনোর পথে ভারতের এখনও কিছু দুর্বলতা রয়েছে। গত তিন মাসের মধ্যে দুটিতে রফতানি সংকুচিত হয়েছে, যার ফলে বেশ কয়েকটি সংস্থা মূল বিদেশি বাজার থেকে নতুন কাজ সুরক্ষিত করার জন্য জোরদার লড়াই করছে। সেগুলি উচ্চহারে ইনপুট খরচ এবং ব্যবসায়িক ব্যয় সামাল দিতে পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। ব্লুমবার্গ-এর চিহ্নিত করা আটটি সূচকের মধ্যে, এক দিকে যেমন ভারতের বেকারত্ব বেড়েছে, অন্য দিকে ঋণের চাহিদা কমেছে ব্যাঙ্কগুলিতে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে উৎপাদন এবং পরিষেবা উভয় ক্ষেত্রেই শক্তিশালী কার্যকলাপ প্রতিফলিত হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে শীর্ষে রয়েছে উৎপাদন বৃদ্ধি। আবার, ডিসেম্বরে পরিষেবা সংস্থাগুলির নতুন ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা টানা সতেরো মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। কিন্তু এক বছর আগের তুলনায় গত ডিসেম্বরে রফতানি কমেছে ১২.২ শতাংশ।
আর যা কিছু বেড়েছে
অর্থনীতিতে ব্য পরিমাপ করতে সাহায্য করে পণ্য ও পরিষেবা কর সংগ্রহ। তা ১৫ শতাংশ বেড়েছে। টানা ১০ মাসে রাজস্ব সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ১৪০০০০ টাকার বেশি। ফেডারেশন অফ অটোমোবাইল ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রশন মাসে বেড়েছে ৮.২ শতাংশ।
শিল্প ও উৎপাদন খাতে চাহিদা পরিমাপ করার জন্য একটি বহুল ব্যবহৃত বিষয় বিদ্যুতের ব্যবহার। যা আগের মাসের তুলনায় বেড়েছে। ডিসেম্বরের শেষে চাহিদা বেড়ে হয়েছে ১৭১ গিগাওয়াট। যা আগের মাসে ছিল ১৬২ গিগাওয়াট। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে ভারতের বেকারত্বের হার ১৬ মাসের সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত হয়েছে। ডিসেম্বরে যা ৮.৩ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলেছে।
আরও পড়ুন: মন্দা কি দোরগোড়ায়? আর্থিক রিপোর্টে আশঙ্কার কালো মেঘ