শেয়ার বাজারের হাতছানি। খুচরো বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। পরিসংখ্যান বলছে, ১২ কোটির বেশি বিনিয়োগকারী ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। কিন্তু জানেন কি, এই বিপুল সংখ্যক বিনিয়োগকারীর অধিকাংশই নিজের বিনিয়োগ হারিয়েছেন!
ক্ষতি প্রায় ১.২৫ লক্ষ কোটি!
একটি অনলাইন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী শেয়ার বাজারে লোকসান করছেন। উপার্জনকারী খুব কম। বর্তমানে প্রায় ১২ কোটি ৩০ লক্ষ ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এই সমস্ত সক্রিয় অ্যাকাউন্ট নয়। কিন্তু সক্রিয় অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৯০ শতাংশ ব্যবসায়ী লোকসানের মুখে পড়েছেন। ২০২২ সালে তাঁদের সম্মিলিত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকা।
কেন ক্ষতির মুখে?
বিশ্লেষকদের মতে, প্রথম কারণ ধৈর্যের অভাব। অনেকেই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে ‘ম্যাজিক’ দেখার অপেক্ষা করতে থাকেন। ভাবেন, রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাবেন। অনেকেই ফিউচার অ্যান্ড অপশন ট্রেডিং করছেন। তাঁদের মধ্যে সকলেই যে লাভের মুখ দেখছেন, তেমনটা নয়। পরিসংখ্যান বলছে, তাঁদের ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই লোকসান করছেন।
অজ্ঞতা বড়ো বিপদ
শেয়ার বাজারে লোকসান করার আরেকটি বড়ো কারণ অজ্ঞতা। ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম স্যামকো (Samco)-র সমীক্ষা বলছে, ৬৫ শতাংশ বিনিয়োগকারী নিজের বিনিয়োগ সম্পর্কে অবগত নন। তাঁরা জানেন না যে তাঁদের শেয়ার বাজারের বিনিয়োগে কতটা রিটার্ন পাচ্ছে। ৬৩ শতাংশ বিনিয়োগকারী সূচক থেকে প্রাপ্ত রিটার্নকে হারানোর লক্ষ্যও নির্ধারণ করেন না। এই ধরনের বিনিয়োগকারীরা নিজেরাই অনুমান করতে পারেন যে তাঁরা শেয়ার বাজার থেকে কতটা সুবিধা পেতে পারেন।
নিয়ন্ত্রণহীন আবেগ
আবেগে ভর দিয়ে বিনিয়োর করে ঠকছেন অনেকেই। শেয়ার বাজারে ‘সেন্টিমেন্ট’ একটা বড়ো ফ্যাক্টর। সেটাকে বুঝতে হলে কৌশল সম্পর্কে শিক্ষার দরকার। কিন্তু শিক্ষার অভাব থেকে শুধুমাত্র আবেগে ভর দিয়ে বিনিয়োগ করতে থাকলে লোকসানে ভুগতেই হয়। কিছু না জেনে শুধুমাত্র পরিচিত অথবা বন্ধু-বান্ধবদের কথায় এবং টাকার নেশায় বিনিয়োগ করলে আবেগ ঘিরে ধরবেই। সেক্ষেত্রে লোকসান করাটা অস্বাভাবিক নয়।
আরও পড়ুন: তুঙ্গে শেয়ার বাজার! আগস্টে এসআইপি-র মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডে রেকর্ড বিনিয়োগ