গোপন কর্মকার: লোকসভার ভোটের উত্তাপ কাটিয়ে পার হয়ে গেল প্রায় মাস দুয়েক। অনেক ছোটোখাটো আঘাত-প্রত্যাঘাতেরই নমুনা দেখল এ দেশের শেয়ার বাজার। কিন্তু নিফটি ১২,০০০ পয়েন্টর উপর নিজেকে ধরে রাখতে চূড়ান্ত বিফল হয়েছে। কিন্তু ১১,০০০-এর খুব একটা নীচে নামার শক্ত মানসিকতাও যথেষ্ট প্রশংসনীয়।
চলতি ২০১৯ সালের একেবারে শুরুর দিকটা চমকপ্রদ উত্থানের পর শুরু হয়েছিল ভাঁটার টান। সেই জায়গা থেকে দীর্ঘ মেয়াদি সংকোচনের মধ্যে দিয়ে ভারতীয় শেয়ার বাজারের প্রায় প্রতিটি সূচক যে যথেষ্ট শক্তি সঞ্চয় করেছে, তা এই ঘটনাতেই স্পষ্ট। তা হলে বিনিয়োগ কি এখন অনেকটাই নিশ্চিত লাভের মুখ দেখাতে পারবে?
গত এক সপ্তাহ ধরে শেয়ার বাজারের মূল সূচকগুলি ক্রমশ নিম্নমুখী। কয়েকশো পয়েন্টের সিঁড়ি দিয়ে নীচের দিকে নামতেই থাকছে। তা হলে কি ফ্রেশ বিনিয়োগকারীর আবির্ভাব ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে যে ভাবে বাজার সংশোধনীর পথ ধরেছিল তার কঠিন প্রভাব দেখা যাচ্ছে এখন।
বছরভর লড়ছে শেয়ার বাজার
আদতে বছরের শুরু থেকেই শত চেষ্টা করেও বাজারকে আচমকা নীচের দিকে টেনে নামানো অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। যেটা সিরিয়ায় কেমিক্যাল অ্যাটাকের ঘটনার পরই হাতেনাতে প্রমাণ হয়েছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল নিয়ে চরম উত্তেজনার মধ্যেও এ দেশের শেয়ার বাজার যথেষ্ট সহনশীলতা দেখিয়েছে। আবার রাষ্ট্রায়ত্ত বৃহৎ তেল সরবরাহকারী সংস্থাগুলিকে লিটার প্রতি এক টাকা লাভ কমানোর সরকারি নির্দেশের ফলে নির্দিষ্ট ওই সংস্থাগুলি ৭-৮ শতাংশ পতনের সম্মুখীন হলেও সামগ্রিক ভাবে বাজার তার উত্তাপ এড়িয়ে চলেছে।
আমেরিকা-চিন বাণিজ্যযুদ্ধে মাঝে-মধ্যে ছ্যাঁকা লাগলেও হাত পুড়ে যাওয়ার তেমন বৃহত্তর নজির নেই। তবে নিফটি যদি নিজেকে ১১,০০০ পয়েন্টের উপরে তিথু করতে না পারে, তা হলে এই দীর্ঘ ব্যাখ্যাও মূল্যহীন হয়ে যেতে পারে।
লোকসভা ভোটের আগেই শেয়ার বাজার ক্লাসিক কনসলিডেশন পর্যায় অতিক্রম করে এসেছে। যা বেশ কয়েক বছরে হাতে গোনা কয়েকবারই দেখা যায়। বাজার থিতু হয়ে, এমন বার্তায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মনে সব থেকে বেশি আশ্বস্থতা আসে। স্বল্প পুঁজির ক্ষেত্রে এমন একটা অবস্থা শুভলক্ষণ তো বটেই!
সপ্তাহের শেষ কেনাবেচার দিনে (শুক্রবার) নিফটির চালচলন আশা জাগানোর মতো লক্ষণ দেখাচ্ছে বলে মত বিষেষজ্ঞদের। অন্য দিকে সেনসেক্সও শুক্রবার ২০০ পয়েন্ট ঝুলিতে পুরে আশার ইঙ্গিত দিচ্ছে।। তেমন হলে ১০,৯৫০ পয়েন্ট ছুঁয়ে দেখার পর নিফটির মতিগতি নিয়ে নয়া সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বিনিয়োগকারীরা।
পড়তে পারেন : দিওয়ালিতে আলোকিত হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে Tata Capital থেকে Mahindra Finance