কয়েক দিন ধরেই পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমার জল্পনা। শনিবার এই ইস্যুতে মুখ খুললেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী।
দেশের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী জানালেন, তেল সংস্থাগুলি এমন অবস্থানে রয়েছে যেখান থেকে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম কমানোর কথা ভাবা যেতে পারে। যদিও এর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম স্থিতিশীল থাকতে হবে।
শনিবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম কমানোর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় মন্ত্রীকে। জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে তিনি এমন একটা জায়গায় নেই যেখান থেকে এ বিষয়ে কিছু ঘোষণা করতে পারেন। আমরা আগামীতে কী করা যায়, সেটা দেখবেন বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি জানান, গত ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের পর থেকে আর জ্বালানির দাম বাড়ায়নি কেন্দ্র।
তিনি আরও বলেন, “গত ত্রৈমাসিক তেল কোম্পানিগুলোর ব্যালেন্সশিট বেশ ভালো হয়েছে। লোকসানের কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া গিয়েছে। পরবর্তীতে কী করা যায়, সেটাই আমরা দেখব”।
সূত্রের মতে, ওএমসিগুলি নিজেদের ক্ষতি প্রায় পুনরুদ্ধার করে ফেলেছে। ইতিবাচক ত্রৈমাসিক ফলাফলেই যা স্পষ্ট হয়েছে। এর ফলে তেল বিপণন সংস্থাগুলি পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম কমিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বেশ কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম কমলেও সরকারি তেল সংস্থাগুলি পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমিয়ে সাধারণ মানুষকে কোনো স্বস্তি দেয়নি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম আচমকা বেড়ে গিয়েছিল। সে সময় অপরিশোধিত তেল ব্যারেল প্রতি ১৩৯ ডলারের কাছাকাছি পৌঁছোয়, যা ২০০৮ সালের পর সবচেয়ে বেশি। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তেই ভারতের সরকারি তেল সংস্থাগুলি ক্রমাগত পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম বাড়াতে শুরু করে। পরে দেশের অনেক শহরেই পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও খুচরো বাজারে দাম না কমার জবাবে কেন্দ্রীয় সরকারি দাবি করেছে, সরকারি তেল সংস্থাগুলি ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল থেকে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তার পরে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়নি। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হয় সরকারি তেল সংস্থাগুলিকে। তিনটি সরকারি তেল সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম এবং ভারত পেট্রোলিয়াম ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর এর মধ্যে ১৮ হাজার ৬২২ কোটি টাকা লোকসান করেছে।
তবে সেই পরিস্থিতি ধীরে ধীরে বদলেছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রগুলি বলেছে, “ওএমসিগুলির ভালো ত্রৈমাসিক করেছে। তাই, ডিজেল এবং পেট্রোলের উপর লোকসান পুরুদ্ধারের বিষয়টিও হ্রাস পাচ্ছে। সবমিলিয়ে তারা ডিজেল পেট্রোলের দাম কমিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: পেট্রোল, ডিজেলের দাম কমতে পারে, সুখবর শোনার অপেক্ষায় আমজনতা