চলমান ভারত, কয়েক দিনের জন্য পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছিল ওই লকডাউনে।
বিবি ডেস্ক: ঠিক এক বছর আগে আজকের দিনে (২৪ মার্চ) দেশ জুড়ে জারি হয়েছিল লকডাউন (Lockdown)। করোনাভাইরাস মহামারি (Coronavirus Pandemic) মোকাবিলায় এই নজিরবিহীন পদক্ষেপের ফলে সাধারণ মানুষের মাথায় সমস্যার পাহাড় ভেঙে পড়েছিল। টানা দু’মাস ধরে কার্যকর ছিল এই কঠোর নিয়ম।
মারাত্মক করোনাভাইরাসের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে আগের দিন রাত ৮টায় আচমকা লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। করোনা সংক্রমণ নিয়ে তৈরি হওয়া উদ্বেগের রেশ এবং সরকারি নির্দেশিকা পালন করতে সব কিছুই বন্ধ হয়ে যায়। রেল, বিমান, বাস, কারখানা, দোকান এবং কয়েক হাজার সংস্থা বন্ধ হয়ে যায়। লোকজন ঘরে ঘরে বন্দি হয়ে পড়েন। অর্থাৎ চলমান ভারত, কয়েক দিনের জন্য পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়ে।
সব থেকে সমস্যায় পড়েন অভিবাসী শ্রমিকরা। নিজের কাজের জায়গায় আটকে পড়েন তাঁরা। ভিন রাজ্যে আটকে পড়ে মহাসংকটে পড়েন তাঁরা। কাজ নেই, খাদ্য নেই, নেই মাথা গোঁজার ন্যূনতম জায়গাও। পায়ে হেঁটে, পণ্যবাহী ট্রাকে করে বাড়ি ফিরতে গিয়ে পথিমধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন অনেক। কেন্দ্র তাঁদের জন্য শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু করলেও তা অনেকটাই দেরিতে। সেই ট্রেন পরিষেবা নিয়েও অব্যবস্থার অভিযোগ ঘিরে সংঘাত বাঁধে কেন্দ্র-রাজ্যের। কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির সমালোচনায় সরব হয় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
২২ মার্চ জনতা কারফিউ
গত ২০২০ সালের ১৯ মার্চ জাতির উদ্দেশে ভাষণে ‘জনতা কারফিউ’-র কথা ঘোষণা করেন মোদী। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় ২২ মার্চ দেশ জুড়ে ‘জনতা কারফিউ’ পালন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আহ্বান জানিয়েছিলেন জনতা কারফিউ-এর। সংক্রমণ এড়াতে তিনি মানুষকে ঘরে থাকতে বলেছিলেন। দেশের কয়েক কোটি মানুষ তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন, পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মান জানাতে বিকেল ৫টায় হাততালি, থালা বাজিয়ে ছিলেন অনেকেই।
তবে সব থেকে উল্লেখযোগ্য বিষয়, ওই জনতার কারফিউর সূচনার পরেই ধারণা করে হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে গোটা দেশ জুড়ে লক ডাউনের প্রাথমিক প্রস্তুতি চলছে। যা বাস্তবায়িত করে কেন্দ্রীয় সরকার। ২৪ মার্চের ভাষণে পরের দিন থেকে দেশ্যবাপী লকডাউনের ঘোষণা করেন তিনি।
দু’মাসের লকডাউন, পরে আনলক
২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত টানা দু’মাস ধরে চলে লকডাউন। যার জেরে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অর্থনীতি। চারটি ধাপে জারি হয়েছিল লকডাউন। ২৪ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সব থেকে কঠোর বিধিনিষেধ ছিল। এই সময়ের মধ্যে, সমস্ত রাস্তা, রেল, এবং বিমান পরিষেবা বন্ধ ছিল এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং জরুরি কর্মী ব্যতীত কারো বাইরে বেরনোর অনুমতি ছিল না।
লকডাউনে বিপর্যস্ত অর্থনীতির হাল ফেরাতে সরকার জুন থেকে ‘আনলক’ প্রক্রিয়া শুরু করে। তবে তার সঙ্গেই কোভিড-১৯ মহামারি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। মাঝে তা নিয়ন্ত্রণে আসার ইঙ্গিত দিলেও ফের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী।
আনলক পর্যায়ে স্বাভাবিক, তবে নতুন রূপে নিউ নর্মাল ফিরে আসে দেশে। লকডাউনের দুর্দশা কাটিয়ে সাধারণ মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর নতুন পদ্ধতি। নিউ নর্মালে অনেক কিছুই ফিরে এলেও নতুন বছরে এসেও স্কুলে ফিরতে পারল না কচিকাঁচারা।
আরও পড়তে পারেন: EPF: প্রভিডেন্ট ফান্ড সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেশ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের