“শেয়ার বাজারে ধস আচকাতে টাকার জন্য অনুরোধ জানিয়ে ফোন করা হয় ছ’-আট জনকে”। বৃহস্পতিবার এমনটাই অভিযোগ করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন করে বলার নয়, আদানি গোষ্ঠীরবিরুদ্ধে কারচুপি এবং জালিয়াতির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল শেয়ার বাজার।
বিমার টাকা নিয়ে সন্দেহ
মমতার অভিযোগ, দলের কিছু নেতাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য জীবন বিমা কর্পোরেশন (এলআইসি) এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে জমা রাখা জনগণের অর্থ ব্যবহার করছে বিজেপি। একই সঙ্গে তাঁর আশঙ্কা, এলআইসি উঠিয়ে দেবে, গ্রাহকরা বিমার টাকা পাবেন কি না সন্দেহ রয়েছে।
গত কয়েক দিন ধরেই আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ-এর রিপোর্টকে কেন্দ্র করে জোর শোরগোল। ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার বাজার মূল্যে। জানা যায়, এলআইসি, এসবিআই-এর বিনিয়োগ রয়েছে ওই সব সংস্থা। কোনো সংস্থার নাম না নিয়েই এ দিন মুখ্য়মন্ত্রীর আক্রমণ, “এলআইসি, ব্যাঙ্কের টাকা নিয়ে পার্টির কয়েকজনকে সুবিধা দিচ্ছে। লাইফ ইনসিওরেন্স উঠিয়ে দেবে, বিমার টাকা পাবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে”।
টাকা চেয়ে ফোন
এ দিন বর্ধমানের সভা থেকে কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে কেন্দ্র বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, বুধবার বাজেট উপস্থাপনের পরে শেয়ার বাজারে ব্যাপক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তাঁর কথায়, “কাল তো প্রায় সরকার পড়ে যাচ্ছিল। কেন পড়ে যাচ্ছিল? শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল। সেই ধস আটকাতে ৬-৮ জনকে ফোন করে শেয়ার কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা জানি তারা কারা। নামগুলি বলে আর তাঁদের অবস্থা দুর্বিষহ করতে চাই না”।
এখানেই না থেমে মমতা আরও বলেন, “ফোন করে বলেছে, কাউকে ২০ হাজার কোটি টাকা দাও। মানে যাদের শেয়ার পড়ে যাচ্ছিল তাদেরকে দাও। কাউকে বলেছে ৩০ হাজার কোটি টাকা দাও। কাউকে বলেছে ১০ হাজার কোটি টাকা দাও। এই দিয়ে সরকার চলে যদি পরিকল্পনা না থাকে?’’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই শেয়ার বাজারে নজিরবিহীন ধাক্কা খেয়েছে আদানি। প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বন্ড। বুধবার আদানি এন্টারপ্রাইজেসের ২০ হাজার কোটি টাকার নতুন শেয়ার ছাড়ার (এফপিও) প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে বুধবার পেশ হয়েছে কেন্দ্রীয় বাজেট। পর দিনই শেয়ার বাজারে ধসের কথা মনে করাতেও ভোলেননি তৃণমূলনেত্রী। তবে একটি বারের জন্যও আদানি গোষ্ঠীর নাম উচ্চারণ করেননি তিনি।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২৩: কিসের দাম বাড়বে আর সস্তা হবে কী কী