মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই শেয়ার বাজারে নজিরবিহীন ধাক্কা খেয়েছে আদানি গোষ্ঠী। বিরোধী দলগুলির দাবি, আদানিদের সংস্থায় এলআইসি-র বিপুল লগ্নি আছে। তবে এর জন্য এলআইসি (LIC) লগ্নিকারীদের উপর কোনো আঁচ পড়বে না বলে বৃহস্পতিবার লিখিত বিবৃতিতে জানিয়ে দিল বিমা সংস্থা।
বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলে যে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, আদানি এন্টারপ্রাইজে বিপুল লগ্নির কারণে শেয়ার বাজারে এলআইসির ভরাডুবি হতে পারে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির তরফে এমনটাই অভিযোগ আনা হয়েছে।
এলআইসি-র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ২০২২-এর ৩০ সেপ্টেম্বর তাদের মোট সম্পত্তির মূল্য ৪১ লক্ষ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। ২০২২ সালে ৩১ ডিসেম্বরে আদানি গোষ্ঠীর সবকটি সংস্থার শেয়ারের মূল্য ৩৫ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। মোট সম্পদের ১ শতাংশ মাত্র। ফলে তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়া হয়, আদানি গোষ্ঠীর ভরাডুবির সম্ভাবনা রয়েছে, তা হলে এএলআইসি-কে তার জন্য বড়োসড়ো ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না। ফলে বিভিন্ন মাধ্যমে এ ব্যাপারে যে সব খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তার কোনো সত্যতা নেই বলে দাবি করেছে এলআইসি।
নতুন করে বলার নয়, আদানি গোষ্ঠীরবিরুদ্ধে কারচুপি এবং জালিয়াতির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল শেয়ার বাজার। মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই শেয়ার বাজারে নজিরবিহীন ধাক্কা খেয়েছে আদানি। প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বন্ড। বুধবার আদানি এন্টারপ্রাইজেসের ২০ হাজার কোটি টাকার নতুন শেয়ার ছাড়ার (এফপিও) প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গিয়েছে।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, এ দিনই সংসদে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের পাশাপাশি আদানিকাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ার দাবি তুলেছেন কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম এবং শিবসেনা-সহ বেশির ভাগ বিরোধী দলের সাংসদেরা। বিরোধীদের দাবি, “কোটি কোটি ভারতীয়র সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছে আদানি গোষ্ঠী। কষ্টার্জিত অর্থ নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ওই সংস্থার মাধ্যমে এলআইসি বা স্টেট ব্যাঙ্কের তহবিলে বিনিয়োগ হয়েছে, ঋণ দেওয়া হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষের জীবনভর উপার্জনের সঞ্চয় রয়েছে”।
এ দিন বর্ধমানের সভা থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এলআইসি, ব্যাঙ্কের টাকা নিয়ে পার্টির কয়েকজনকে সুবিধা দিচ্ছে। লাইফ ইনসিওরেন্স উঠিয়ে দেবে, বিমার টাকা পাবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে”।
আরও পড়ুন: শেয়ার বাজারে ধস আটকাতে টাকা চেয়ে ফোন, তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত মমতার