ব্যাঙ্ক অথবা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিলে তা সুদ-সহ মিটিয়ে দেওয়াটাই নিয়ম। গৃহঋণ (Home loan) হোক বা ব্যক্তিগত ঋণ, মাসিক কিস্তি বা ইএমআই (EMI) দিতে হয় গ্রাহককে। কিন্তু ইএমআই সময়মতো মেটাতে না পারলে জরিমানা ধার্য হয়। তবে এর ফলাফল আরও সুদূরপ্রসারী হতে পারে কোনো কোনো ক্ষেত্রে।
আপনি যদি মনে করেন চালু ইএমআই মতো নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন না, তা হলে বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি ঋণের মেয়াদ বাড়াতে পারেন, তা বলে ইএমআই কমে যাবে। একই ভাবে, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার আর্থিক পরিস্থিতির কথা ভাবুন। ঋণের শর্তগুলি মাথায় রেখেই ঋণ পুনর্গঠন করা যেতে পারে। এ ছাড়াও আপনি আর্থিক জরুরি অবস্থার কারণে সাময়িক স্বস্তির জন্য অনুরোধ করতে পারেন, তবে এর জন্যও আপনাকে জরিমানা দিতে হতে পারে।
তবে বিকল্প ব্যবস্থা অনুসরণ করেও টাকা মেটাতে না পারলে ঋণখেলাপি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। সেক্ষেত্রে ঋণ খেলাপি হিসাবে নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। আইন অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধার দেওয়া অর্থ আদায়ের পদক্ষেপ নেয়। ঋণ দেওয়া অথবা আদায়ের সময় ঋণদাতা এবং ব্যাঙ্কগুলিকে যাবতীয় নিয়মগুলি অনুসরণ করতে হয়। ঋণ গ্রহণকারীদেরও কিছু অধিকার রয়েছে, যা জানা গুরুত্বপূর্ণ।
চাকরি চলে যাওয়া অথবা চিকিৎসা সম্পর্কিত জরুরি কারণের কথা উল্লেখ করার অধিকার রয়েছে ঋণগ্রহীতার। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে এবং ব্যাঙ্ক থেকে একটি অফিসিয়াল নোটিশ পাওয়ার পরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে নিজের অবস্থান জানিয়ে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আবেদন জানানো আপনার অধিকার।
ব্যাঙ্ক বা কোনো তৃতীয় পক্ষের রিকভারি এজেন্ট দিনের যে কোনো সময়ে ঋণগ্রহীতাকে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হয়রানি বা বাধ্য করতে পারে না। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) নির্দেশিকা অনুসারে, এই কাজ করার সময় একটি আচরণবিধি অনুসরণ করতে হবে। গ্রাহকদের সঙ্গে অত্যন্ত সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে। এর জন্য প্রশিক্ষিত এজেন্ট নিয়োগ করতে হবে। তাদের কল করার সময় এবং গ্রাহকের তথ্যের গোপনীয়তা সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত।
ব্যাঙ্ক/ঋণদাতার প্রতিনিধি চিৎকার করলে বা শারীরিক নির্যাতন করলে বা হুমকি দিলে আপনি আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন।
বকেয়া পরিশোধ করতে না পারলে ব্যাঙ্ক নিজের টাকা পুনরুদ্ধার করার জন্য ঋণগ্রহীতার সম্পত্তি নিলাম করার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে। কিন্তু সেটা অবশ্যই ঋণগ্রহীতাকে জানিয়ে। এতে সম্পত্তির ন্যায্য মূল্য, নিলামের সময় ও তারিখের বিবরণ, রিজার্ভ মূল্য ইত্যাদি উল্লেখ করা উচিত। ঋণ খেলাপি হিসাবে আপনার অধিকার আপনার সম্পত্তির অবমূল্যায়ন হলে আপত্তি জানাতে পারবেন।
নিলাম প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ, সম্পত্তির মূল্য যে কোনো সময় বাড়তে পারে। ফলে ঋণদাতা নিজের প্রাপ্য টাকা ফেরত পাওয়ার পর অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিতে হবে।
আরও পড়ুন: এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির খেতাব পুনরুদ্ধার করলেন মুকেশ অম্বানি, ছাড়িয়ে গেলেন আদানিকে