বিবিডেস্ক: জাপান এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার উদ্যোগ নিল দ্য বেঙ্গল চেম্বার। শনিবার বণিকসভার প্রাঙ্গণে এ দেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত কেনজি হিরামাৎসুর সঙ্গে বিশেষ আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল তারা। সেখানেই বাংলা-সহ ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও ব্যবসায়িক সম্পর্ক বিস্তারের কথা তুলে ধরেন তিনি।
কেনজি হিরামাৎসু ‘জাপান–ভারত: সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র’ শীর্ষক বিষয়ে আলোচনা করেন। কলকাতার ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতায় জাপানের কনসাল জেনারেল মাসায়ুকি তাগা। তিনি জানালেন ১৯টি জাপানি কোম্পানি এবং ২০৯ টি জাপানি প্রতিষ্ঠান এই মুহূর্তে কলকাতায় রয়েছে। এ রাজ্যে জাপান লগ্নি করছে। জাপানি সংস্থা কাওয়াসাকি রিকুসো ট্রান্সপোর্টেশন কোম্পানি বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে। তাপনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাসম্পন্ন কৃষি গুদাম তৈরি করছে। এগুলি সৌরবিদ্যুৎ চালিত। এ ব্যাপারে দু’পক্ষই খুব আগ্রহী।
জাপানের কনসাল জেনারেল মাসায়ুকি তাগা জানান, এ রাজ্যে অন্য যে সব জাপ–সংস্থা কাজ করছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল টাটা হিতাচি কন্সট্রাকশন মেশিনারি, নিপ্পাই শালিমার ফিডস, নোমুরা রিসার্চ ইন্সটিটিউট ফিনান্সিয়াল টেকনোলজিস। বাংলায় স্টার্ট আপ খুলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জেটরো (জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন)। ইতিমধ্যে ওয়েবেল–বিসিসি অ্যান্ড আই টেক ইনকিউবেশন সেন্টারের সঙ্গে তাদের একদফা বৈঠকও হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর সেখানেও ব্যবসায়িক পরিধি বিস্তারের কথা জানিয়েছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত। তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলির মতো জম্মু-কাশ্মীরেও বিনিয়োগ করবে জাপান।
আলোচনা থেকে জানা যায়, চলতি বছরেই ভারত এবং জাপান এই দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৬৭ বছর পূর্ণ হচ্ছে। দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করতে ২০১৭ সালে ‘জাপান–ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডলি এক্সচেঞ্জেস’ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। জাপান সরকারের রিপোর্ট অনুসারে ২০১৮ সালে ভারত জাপানে ৫৮৫ বিলিয়ন ইয়েন এবং জাপান ভারতে ১২৩৬ বিলিয়ন ইয়েনের পণ্য পাঠিয়েছিল। জাপান থেকে ভারতে সরাসরি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৩৭৭ বিলিয়ন ইয়েন।
এ দেশে জাপানের বেসরকারি সংস্থাগুলি আরও বেশি করে লগ্নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এখন ভারতে ১,৩০৫টি জাপ–সংস্থা কাজ করছে। সে দেশের সরকারি সহযোগিতার কথা ধরলে ভারত জাপানের সাহায্যের সবথেকে বড় ভাগটা পায়। ভারত–জাপান যৌথ সহযোগিতায় উপকার পাওয়া ক্ষেত্রগুলির মধ্যে রয়েছে গাড়ি শিল্প, প্রতিরক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং রেল।