ব্যাঙ্কগুলিকে গ্রাহকদের কেওয়াইসি (KYC) আপডেট করানোর বিষয়টি বাধ্যতামূলক করেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI)। যে কারণে সময় সময়ে ব্যাঙ্কগুলি প্রয়োজন মতো গ্রাহককে নিজের কেওয়াইসি আপডেট করানোর বার্তা পাঠায়। তবে কেওয়াইসি আপডেট করা না হলে যে কোনো গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়। যতক্ষণ না কেওয়াইসি আপডেট করানো হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত অ্যাকাউন্টে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা স্থগিত রাখে ব্যাঙ্ক।
আরবিআই-এক নির্দেশিকা অনুযায়ী, যদি কোনো গ্রাহক নিজের প্যান নম্বর বা ফর্ম ৬০-এর মতো নথিগুলি ব্যাঙ্কে জমা না করেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে একাধিক পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। ওই সমস্ত নথি জমা করার পর গ্রাহক ফের আগের মতোই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন। তবে, অ্যাকাউন্ট কোনো পরিষেবা বন্ধ করার আগে ব্যাঙ্কের তরফে বিভিন্ন মাধ্যমে সতর্কতামূলক বার্তা পাঠানো হয়।
কেওয়াইসি আপডেট করার জন্য ব্যাঙ্কের তরফে গ্রাহককে ই-মেল অথবা মোবাইল এসএমএস পাঠানো হতে পারে। এ ধরনের বার্তায় একটি নির্দিষ্ট সময়সীমাও উল্লেখ করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে এ ধরনের বার্তা পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজটি সেরে ফেলা উচিত। কারণ, ওই সময়সীমা পার হয়ে গেলে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে।
কী ভাবে অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করবেন
যদি কেওয়াইসি জমা না করার জন্য আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন স্থগিত হয়ে যায়, তা হলে পুনরায় কেওয়াইসি দিয়ে তা সক্রিয় করা যেতে পারে। এ রকম ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সক্রিয় করার প্রক্রিয়া প্রতিটি ব্যাঙ্কের জন্য একই। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সেগুলি-
১. ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে কেওয়াইসি জমা করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে রি-কেওয়াইসি ফর্ম এবং যাবতীয় নথির প্রয়োজন হতে পারে।
২. ই-মেল, পোস্ট অথবা ক্যুরিয়ারের মাধ্যমেও পুনরায় কেওয়াইসি জমা করার সুবিধা দিয়ে থাকে কিছু ব্যাঙ্ক। এ ক্ষেত্রে স্বাক্ষরিত আবেদনপত্র এবং অন্যান্য নথি পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে।
৩. বেশ কিছু ব্যাঙ্ক ভিডিও কলের মাধ্যমে রি-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুবিধা দিয়ে থাকে। যাঁদের আধার এবং প্যান নম্বর রয়েছে, তাঁরা ওইসব ব্যাঙ্কে এই পরিষেবা পেতে পারেন।
৪. অনলাইনে রি-কেওয়াইসি জমা করার সুবিধা রয়েছে অনেক ব্যাঙ্কে। নেট ব্যাঙ্কিং অথবা ব্যাঙ্কের অ্যাপের মাধ্যমে এই কাজটি করা যেতে পারে।
কেন কেওয়াইসি আপডেট করবেন
কেওয়াইসি (KYC) আপডেটের জন্য যে কোনো ব্যাঙ্ক গ্রাহককে একটি ডিক্লেয়ারেশন দিতে হয়। কখনও কখনও কিছু পরিবর্তনের জন্যও এই ফর্মটি পূরণ করতে হয়। কেউ যদি দীর্ঘদিন ধরে কেওয়াইসি ফর্মটি পূরণ না করেন, তা হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই কাজটি সেরে ফেলা উচিত। মনে রাখবেন, কেওয়াইসি না করলে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ব্যবহার করতে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
যদি কোনো গ্রাহক কেওয়াইসি আপডেট না করেন, তা হলে এটি তাঁর লেনদেনকেও প্রভাবিত করতে পারে। এ ছাড়া তাঁর অ্যাকাউন্ট কিছু সময়ের জন্য ব্লক হয়ে যেতেও পারে। সেই সময়ের জন্য গ্রাহক নির্দিষ্ট কিছু পরিষেবা ছাড়া বাকি আর কোনো পরিষেবা পাবেন না। তবে ব্যাঙ্ক যদি কোনো গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট ব্লক করে, সঙ্গে সঙ্গে সে ব্যাপারে গ্রাহককে অবহিত করে।
আরও পড়ুন: ময়লা/ ছেঁড়া নোট নিয়ে জেরবার? জানুন, আরবিআই-এর নিয়ম