ফিনান্স
ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা রাখলে কি আয়কর ছাড় পাওয়া যায়?


ফিক্সড ডিপোজিটে অর্থ সঞ্চয় করা যায় ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস অথবা অন্যান্য ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও। সঞ্চয়ের উদ্দেশ্য যখন সুরক্ষিত ভাবে টাকা রেখে সম্পদবৃদ্ধি, সেই সূত্রেই এই প্রশ্নটি চলে আসে- ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা রাখলে কি আয়কর ছাড় পাওয়া যায়?
এই প্রশ্নের উত্তর দেবে আয়কর আইনের ৮০টিটিবি ধারা। যা ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে।
আয়কর আইনের এই ধারায় ফিক্সড ডিপোজিটের সুদ থেকে একটি আর্থিক বছরে শুধুমাত্র প্রবীণ নাগরিকরাই (৬০ বছর বা তার বেশি বয়সি) ৫০ হাজার টাকার করছাড় পাওয়ার যোগ্য। তবে তাঁরা শুধু ফিক্সড ডিপোজিট-ই নয়, সেভিংস থেকে প্রাপ্ত সুদের উপরও সমপরিমাণ ছাড় পেতে পারেন।
এই ধারায় সমবায় ভূমি বন্ধকী ব্যাঙ্ক বা সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাঙ্ক-সহ ব্যাঙ্কিং ব্যবসায় যুক্ত সমবায় সমিতিতে থাকা আমানতের উপর সুদ এবং পোস্ট অফিসে আমানতের উপর সুদে এই সুবিধা ব্যবহার করতে পারেন। অর্থাৎ, যে কোনো ধরনের সঞ্চয় থেকে প্রাপ্ত সুদের উপর এই ছাড় প্রবীণ নাগরিকরা পেয়ে থাকেন।
তবে, ৮০টিটিবি ধারায় সাধারণ নাগরিকরা ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের উপর কোনো আয়কর ছাড় পান না।
এ বিষয়েই বলে রাখা যায়, আয়কর আইনের ৮০টিটিএ ধারায় সুদের উপর ছাড় পেয়ে থাকেন একক ব্যক্তি এবং অবিভক্ত হিন্দু পরিবার (এইচইউএফ) উভয়েই। কিন্তু সে ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সেভিংস থেকে প্রাপ্ত সুদের উপর ছাড় মেলে। যার পরিমাণ ১০ হাজার (প্রতি আর্থিক বছরে)। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, কোনো রকমের মেয়াদি আমানত থেকে প্রাপ্ত সুদে ছাড় মেলে না ৮০টিটিএ-তে। যেমন, ফিক্সড ডিপোজিট, রেকারিং ডিপোজিট অথবা অন্যান্য যে কোনো ধরনের মেয়াদি আমানত থেকে প্রাপ্ত সুদে কোনো ছাড় পাওয়া যায় না।
অর্থাৎ, ৮০টিটিএ ধারায় সাধারণ অথবা প্রবীণ নাগরিকরা ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের উপর কোনো আয়কর ছাড় পান না।
প্রসঙ্গত, কোনো প্রবীণ নাগরিক একটি আর্থিক বছরে সুদ থেকে ৫০ হাজার টাকার কম আয় করলে সেই টাকা পুরোপুরি করছাড়যুক্ত। অন্য দিকে ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় করলে, মোট আয় থেকে ৫০ হাজার বাদ দেওয়ার পর বাকি টাকার উপর কর তাঁকে দিতে হয়। কিন্তু তিনি যদি ফিক্সড ডিপোজিট এবং সেভিং, একত্রিকরণের পর ৫০ হাজারের বেশি টাকা সুদ আয় করেন, সে ক্ষেত্রে ৮০টিটিএ নয়, শুধুমাত্র ৮০টিটিবি থেকেই ৫০ হাজার টাকা করছাড় পাবেন।
খবর
পোস্ট অফিসের জনপ্রিয় সব সঞ্চয় প্রকল্প, জানুন সর্বশেষ সুদের হার
বার্ষিক ভিত্তিতে জমা করা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার উপর আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় করছাড়ের সুবিধাও রয়েছে।

বিভিন্ন ক্ষুদ্র সঞ্চয় বা পোস্ট অফিস স্কিমের সুবিধা দিয়ে থাকে সরকার। এগুলো অনেকেরই ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা পূরণ করে থাকে। এই সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার তিন মাসে একবার (প্রতি ত্রৈমাসিক) সংশোধন করা হয়। এক দিকে সরকারি সমর্থন, অন্য দিকে নিশ্চিত রিটার্ন পাওয়ার কারণে একটা বড়ো অংশের বিনিয়োগকারীদের কাছে জনপ্রিয় স্কিমগুলির মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট, পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড ইত্যাদি। অন্য দিকে বার্ষিক ভিত্তিতে জমা করা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার উপর আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় করছাড়ের সুবিধাও রয়েছে।
অর্থমন্ত্রকের সর্বশেষ সার্কুলারে ঘোষণা করা হয়, চলতি ত্রৈমাসিকে পিপিএফ-এ ৭.১০ শতাংশ, এনএসসি-তে ৭.০০ শতাংশ, মান্থলি ইনকাম স্কিমে (MIS)৭.১০ শতাংশ হারে সুদ পাবেন গ্রাহকরা।
এক নজরে দেখে নিন বিভিন্ন ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পে কার্যকর সুদের হার (Interest Rates)-
স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প | ১ জানুয়ারি, ২০২৩ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত সুদের হার | কী ভাবে জমা হবে |
সেভিংস ডিপোজিট | ৪% | বার্ষিক |
১ বছর মেয়াদি আমানত | ৬.৬০% | ত্রৈমাসিক |
২ বছর মেয়াদি আমানত | ৬.৮০% | ত্রৈমাসিক |
৩ বছর মেয়াদি আমানত | ৬.৯০% | ত্রৈমাসিক |
৫ বছর মেয়াদি আমানত | ৭.০০% | ত্রৈমাসিক |
৫ বছরের রেকারিং | ৫.৮০% | ত্রৈমাসিক |
৫ বছরের সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম | ৮.০০% | ত্রৈমাসিক এবং দিয়ে দেওয়া হয় |
৫ বছরের মাসিক আয় প্রকল্প | ৭.১০% | মাসিক এবং দিয়ে দেওয়া হয় |
৫ বছরের জাতীয় সঞ্চয় শংসাপত্র | ৭.০০% | বার্ষিক |
পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড স্কিম | ৭.১০% | বার্ষিক |
কিষান বিকাশ পত্র | ৭.২০% (১২৪ মাসে ম্যাচুরিটি) | বার্ষিক |
সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্ট স্কিম | ৭.৬০% | বার্ষিক |
ফিনান্স
সময়ের আগেই হোম লোন মেটাতে চান? জানুন দুর্দান্ত কিছু টিপস
সচরাচর এই সময়সীমা বেশ দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে। ফলে দিনের পর দিন ধরে ইএমআই-এর বোঝা বয়ে নিয়ে যেতে হয় ঋণগ্রহীতাকে।

নিজের একটা বাড়ি বা ফ্ল্যাট। এমন স্বপ্ন অনেকেরই। কিন্তু এর জন্য দরকার বড়ো অঙ্কের টাকার। বাড়ি অথবা ফ্ল্যাট কেনার জন্য যে কারণে বেশির ভাগ ক্রেতাই শরণাপন্ন হন ব্যাঙ্ক অথবা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। যেখানে সহজ মাসিক কিস্তিতে গৃহঋণ (Home loan) নিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব।
একটি নির্দিষ্ট সুদের হারে ঋণ দেয় ব্যাঙ্ক। যার জন্য গ্রাহককে প্রতি মাসে ইএমআই (EMI) দিতে হয়। বেঁধে দেওয়া হয় ঋণ পরিশোধের সময়সীমা। সচরাচর এই সময়সীমা বেশ দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে। ফলে দিনের পর দিন ধরে ইএমআই-এর বোঝা বয়ে নিয়ে যেতে হয় ঋণগ্রহীতাকে।
অন্যদিকে, যত দিন না ঋণ পরিশোধ হচ্ছে, ততদিন গ্রাহকের বাড়ির কাগজপত্র ব্যাঙ্কের কাছে জমা থাকে। অর্থাৎ, ঋণের পরিমাণ সম্পূর্ণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ির মালিকানা ব্যাঙ্কের হাতেই। এই কারণে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি পরিশোধ করা উচিত। দ্রুত এই ঋণ মিটিয়ে দিয়ে ঝক্কি কমানোর কিছু বিকল্প পথও রয়েছে।
গৃহঋণ তাড়াতাড়ি পরিশোধ করতে, প্রতি বছর লোনের ব্যালেন্সের অতিরিক্ত ৫ শতাংশ জমা করতে পারেন। এতে করে মূল পরিমাণ কমে যায় এবং ২০ বছরের ঋণ ১২ বছরে সম্পূর্ণ করা যায়।
আরও একটি বিকল্পের মধ্যে রয়েছে বছরে বাড়তি ইএমআই জমা করার পদ্ধতি। আপনি যদি গৃহঋণ তাড়াতাড়ি মিটিয়ে দিতে চান তবে ১২-র পরিবর্তে বছরে ১৩টি ইএমআই দিন৷ প্রতি বছর যদি অতিরিক্ত একটি ইএমআই জমা করে, তা হলে ২০ বছরের ঋণ শেষ শেষ হয়ে যাবে ১৭ বছরে।
তবে সব কিছুই নির্ভর করছে গ্রাহকের মাসিক আয়ের উপর। কারণ, এমনিতেই গৃহঋণের ইএমআই বেশ বড়ো হয়। যদি বাড়তি অর্থের সংস্থান হয়ে যায়, তা হলে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে আপনি পূর্বনির্ধারিত ইএমআই-এর পরিমাণও বাড়িয়ে নিতে পারে। পরিসংখ্যান বলছে, মাসিক কিস্তি ৫ শতাংশ বাড়িয়ে নিলে ২০ বছরের ঋণ ১৩ বছরেই মিটিয়ে ফেলা সম্ভব।
আরও পড়ুন: কলকাতায় প্রথম শাখা খুলল ফিনকেয়ার স্মল ফাইন্যান্স ব্যাঙ্ক
খবর
অর্থবর্ষ প্রায় শেষ, আয়কর বাঁচানোর ব্রহ্মাস্ত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল তো?
আপনাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারে তা হল আয়কর আইনের ৮০ নম্বর ধারা। আয়কর বাঁচাতে এটাই হতে পারে আপনার ব্রহ্মাস্ত্র।

প্রায় শেষ হতে চলল ২০২৩ অর্থবর্ষ। আর কয়েক দিন পরেই পেশ হবে চলতি বছরের সাধারণ বাজেট (Budget 2023)। আর তার পরেই শুরু হবে আয়কর (Income Tax) বাঁচানোর জটিল হিসাব। এই অবস্থায় যা আপনাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারে তা হল আয়কর আইনের ৮০ নম্বর ধারা। আয়কর বাঁচাতে এটাই হতে পারে আপনার ব্রহ্মাস্ত্র।
৮০ নম্বর ধারা কী
আয়কর আইনের ৮০ ধারা সাধারণ মানুষের হাতে কর থেকে ছাড় পাওয়ার অন্যতম অস্ত্র। আয়কর থেকে ছাড় পেতে এই ধারায় ১২টি উপধারা আছে। তবে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। ৮০ নম্বর ধারার যে উপধারার ছাড়ের সুযোগই আপনি নিন না কেন, আপনার কিন্তু ওই ১ লক্ষ ৫০ হাজার পর্যন্তই মোট ছাড় মিলবে এই ধারায়।
দেখে নেওয়া যাক কোন উপধারায় কী কী ছাড় পাওয়া যায়—
৮০ ধারার উপধারাগুলি কী কী
৮০সি (80 C): এই উপধারায় আপনি ছাড় পাবেন কর্মচারী ভবিষ্যনিধি, জীবন বিমা, ইএলএসএস, গৃহঋণের মূল শোধ, বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য স্ট্যাম্প ডিউটির খরচ, সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা, ন্যাশনাল সেভিংস স্কিম, সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম, ইউলিপ, পাঁচ বছরের কর বাঁচানোর ফিক্সড ডিপোজিট, ইনফ্রাস্ট্রাকচার বন্ডের মতো বিনিয়োগে।
৮০সিসিসি (80 CCC): এই উপধারায় অ্যানুইটি পেনশন প্রকল্পে বিনিয়োগ অথবা সেই প্রকল্প থেকে পাওয়া আয়ের উপর ছাড় পাওয়া যায়।
৮০সিসিডি(১) (80 CCD (1): এই উপধারায় ক) বেতন বাবদ আয়ের ১০ শতাংশ, খ) স্বনিযুক্ত হলে সামগ্রিক বাৎসরিক আয়ের ২০ শতাংশ অথবা গ) এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এই তিনের মধ্যে যেটি সব থেকে কম তার উপরে করছাড় মেলে।
৮০সিসিডি (১বি) (80 CCD (1B): এনপিএস প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য অতিরিক্ত ৫০ হাজার ছাড়। অটল পেনশন যোজনা থেকেও এই উপধারায় ছাড়ের সুযোগ রয়েছে।
৮০সিসিডি (২): চাকুরিরতদের জন্য এনপিএসে বিনিয়োগে ছাড়।
আরও পড়ুন: নজরে লোকসভা ভোট, বাজেটে গ্রামের দিকে বেশি নজর মোদী সরকারের
-
খবর3 months ago
আশঙ্কা বাড়িয়ে আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাঙ্কের পর ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি কমাল মুডিজও
-
ফিনান্স3 months ago
বিনিয়োগের তালিকায় কেন রাখতেই হবে আপৎকালীন তহবিল
-
বিমা4 months ago
স্বাস্থ্য বিমা করাবেন? এই বিষয়গুলি অবশ্যই মাথায় রাখবেন
-
বিমা4 months ago
মানসিক সমস্যায় কি স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পাওয়া যায়?
-
ফিনান্স3 months ago
বাড়িতে বসে কী ভাবে ইপিএফ ক্লেম স্ট্যাটাস জানবেন, রইল সহজ পদ্ধতি
-
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি2 months ago
হোয়াটসঅ্যাপে এলআইসি পরিষেবা, জানুন কী ভাবে ব্যবহার করবেন
-
ফিনান্স5 months ago
বিকল্প আয়ের পথ খুঁজছেন? তা হলে এই ৫টি টিপসে চোখ বুলিয়ে নিন
-
খবর5 months ago
SIP: সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে এসআইপি