কষ্টের টাকা! রাখবেন কোথায়?

finance

বিশাল গুপ্ত: আয় রয়েছে, তার সঙ্গেই তালমিলিয়ে রয়েছে ব্যয়। কিন্তু পরিশ্রমের আয়ের সবটাই যদি ব্যয়ের খাতায় চলে যায়, তা হলে ভবিষ্যৎ লজ্ঝড়ে!

তাই সময় থাকতেই আগাম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সঞ্চয়ের। কিন্তু কোথায় করবেন সেই সঞ্চয়। তার সুরক্ষার প্রশ্নটাই সব থেকে বড়ো। তবে এমন কিছু বিনিয়োগ মাধ্যম রয়েছে, যেখানে টাকা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে যাওয়া যায়। এক দিকে সঞ্চয় অন্য দিকে সম্পদ বৃদ্ধি, দুই উদ্দেশ্যই সাধিত হয় এই মাধ্যমে। তুলে ধরা হল সেগুলির মধ্যে থেকেই চারটি মাধ্যমের কথা-

পিপিএফ

পিপিএফ বা পাবলিক প্রভিডেন্ড ফান্ড সরকার নিয়ন্ত্রিত একটি বিনিয়োগ পদ্ধতি। বছরে ন্যূনতম বিনিয়োগের পরিমাণ মাত্র ৫০০ টাকা। আবার আয়কর মুক্ত সর্বার্ধিক বিনিয়োগের পরিমাণ দেড় লক্ষ টাকা। প্রতিমাসে টাকা জমা করার হ্যাপা না থাকলেও সুদের হার অন্যান্য সঞ্চয় প্রকল্পের থেকে তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই বেশি। বিনিয়োগের সময়সীমা ১৫ বছর হলেও তার আগেই নির্দিষ্ট সময় অন্তর ঋণ নেওয়ার সহজ সুবিধা দিয়ে থাকে পিপিএফ। এ ছাড়া মেয়ের বিয়ে থেকে শুরু করে চিকিত্‍সাজনিত প্রয়োজনে ১৫ বছরের আগেই পিপিএফ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে পুরো টাকা (সুদ-সহ) তুলে নেওয়ার সুবিধা রয়েছে। বেশ কয়েকবার পিপিএফে সুদের হার ওঠা-নামা করলেও বর্তমানে স্থির রয়েছে ৭.৯ শতাংশে।

মিউচুয়াল ফান্ড

এক দিকে সঞ্চয় অন্য দিকে সম্পদ বৃদ্ধি, দুই পরিকল্পনাই সফল ভাবে বাস্তবায়িত করতে পারে মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগ। তবে এর জন্য সব থেক বেশি প্রয়োজন সময়, শৃঙ্খলা, এবং ধৈর্য দেখানোর মানসিকতা। ধরুন আপনি মাসিক ৫০০ টাকা কোনো একটি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করছেন। রাতারাতি যেমন সেই টাকা কয়েকগুণ হবে না তেমনই অন্য দিকে বাজারের টানাপোড়েনে খেই হারিয়ে ফেলার প্রবণতা দেখানোও চলবে না। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ মিউচুয়াল ফান্ডে রাখার মানসিকতাকে বেঁধে ফেলতে হবে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের উপর। এখানে ঝুঁকির পরিমাণ ন্যূনতম। ফলে রক্ষণশীল পদ্ধতিতেই সঞ্চয়ের পাশাপাশি সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যও হাসিল করা সম্ভব।

রেকারিং ডিপোজিট

সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের রেকারিং ডিপোজিট বা আরডি বহুদিন থেকে আকর্ষণীয় একটি বিনিয়োগ মাধ্যম। সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে যাঁরা ন্যূনতম ঝুঁকি নিতে চান না বা রক্ষণশীল মানসিকতার বিনিয়োগকারীদের কাছে আরডি খুবই জনপ্রিয়। সর্বাধিক ১০ বছরের জন্য নির্দিষ্ট মাসিক টাকার বিনিয়োগ করা সম্ভব এখানে। মাত্র ১০০ টাকা দিয়েও শুরু করা যেতে পারে। সুদের হার ৫ থেকে ৮ শতাংশের আশেপাশে বেঁধে রাখে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি। তবে সঞ্চয়ের টাকা ফেরত পাওয়ার ১০০ শতাংশ নিশ্চয়তা থাকলেও আরডি থেকে আয় মোটেই আয়কর মুক্ত নয়। সুদ হিসাবে বার্ষিক ১০ হাজার টাকার উপর আয় করলে ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিস ১০ শতাংশ হারে টিডিএস কেটে নেয়।

এনএসসি

ডাক বিভাগের ন্যাশনাল সেভিংস স্কিম বা এনএসসিতেও ফেরতের নিশ্চয়তাও ১০০ শতাংশ। ন্যূনতম ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত সার্টিফিকেট কেনা যেতে পারে। এখানেও বার্ষিক সুদের হার ওঠানামা করে, এখন সুদ ৭.৯ শতাংশ। আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় লাভের টাকা সেই বছরের নিরিখে করমুক্ত। এমনকী প্রাপ্ত সুদের উপরও করছাড় পাওয়া যায়।

বিনিয়োগ আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল


Discover more from banglabiz

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from banglabiz

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading