বাংলাbiz ডেস্ক: করোনাভাইরাস মহামারিকে (Coronavirus pandemic) ‘ঈশ্বরের সৃষ্টি’ বলে আখ্যা দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman)। তাঁর মতে, এই অভাবনীয় কারণ জিএসটি সংগ্রহে প্রভাব ফেলেছে।
তাঁর কথায়, “চলতি বছরে আমরা জিএসটি (GST) আদায়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি।” বৃহস্পতিবার জিএসটি কাউন্সিলের ৪১তম বৈঠক বসে। সেই বৈঠকের শেষেই এ কথা বলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
এ দিন তিনি জানান, করোনাভাইরাস মহামারির দরুন ২০২১ অর্থবর্ষে জিএসটি ঘাটতি ২.৩৫ লক্ষ টাকায় ঠেকবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বছরের মার্চ মাসে ১৩,৮০৬ কোটি টাকা-সহ ২০২০ সালে কেন্দ্র জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যগুলির জন্য ১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। যেখানে জিএসটি ক্ষতিপূরণের জন্য সেস সংগৃহীত হয়েছে মাত্র ৯৫,৪৪৪ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, জিএসটি কম্পেনশেসন সেস থেকে আদায়ীকৃত একটি অংশ রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়ার দাবি তোলা হয়। কিন্তু তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই স্পষ্ট পরিসংখ্যান পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
কেন্দ্রের জিএসটি হিসাব
কেন্দ্রের হিসাব অনুসারে, চলতি অর্থবছরে রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণের জন্য প্রয়োজন হবে তিন লক্ষ কোটি টাকা। যার মধ্যে জিএসটি আমলের সেসের জন্য ৬৫,০০০ কোটি টাকা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে মোট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: আজ জিএসটি বৈঠক: রাজ্যগুলির ৬ লক্ষ কোটি রাজস্ব ক্ষতি কেন্দ্রকে পূরণ করতে বলল কংগ্রেস
রাজস্বসচিব অজয় ভূষণ পাণ্ডে বলেন, চলতি অর্থবর্ষে যে আর্থিক ঘাটতি অনুমান করা হচ্ছে, তার মধ্যে জিএসটি প্রণয়নের কারণে ৯৭,০০০ কোটি টাকা ধরা হচ্ছে। বাকি পরিমাণ ঘাটতির জন্য দায়ী করোনা মহামারি।
রাজ্যগুলির জন্য দু’টি বিকল্প
প্রায় পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকের পর জানানো হয়, এই ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যগুলিকে দু’টি বিকল্প দিচ্ছে জিএসটি কাউন্সিল। সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্যগুলিকে সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
প্রথম বিকল্প: রাজ্য সরকারগুলি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) থেকে বিশেষ সময়সীমার মধ্যে যুক্তিসঙ্গত সুদের হারে ৯৭,০০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার সুযোগ পাবে। এই টাকা সেস সংগ্রহ থেকে পাঁচ বছর পর (জিএসটি বাস্তবায়নের পাঁচ বছর পর) বা ২০২২ সালের শেষে পরিশোধ করা যাবে।
দ্বিতীয় বিকল্প: রাজ্যগুলির সামনে দ্বিতীয় বিকল্পটি হল ‘বিশেষ উইন্ডো’র অধীনে সম্পূর্ণ ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকার ঘাটতির পরিমাণ ঋণ হিসেবে নেওয়া।
বিকল্প শুধু এ বছরের জন্য!
কেন্দ্রের প্রস্তাব খতিয়ে দেখে বিকল্প নির্বাচনের জন্য সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান পাণ্ডে।তবে এই বিকল্প শুধমাত্র চলতি বছরের জন্যেই, পরের বছরের জন্য নয়, তেমন বার্তা দিয়ে রেখেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানান, “বিকল্পের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করার জন্য রাজ্যগুলি সাত দিন সময় চেয়েছিল। তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই বিকল্প শুধু মাত্র চলতি বছরের জন্য দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরে তখনকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে।”