‘আপনার অ্যাকাউন্ট ক্রেডিট করা হয়েছে…’, প্রতারণার নতুন ছকে পা দিলেই বিপদ

account

‘আপনার অ্যাকাউন্ট ক্রেডিট করা হয়েছে…’। শুধুমাত্র এমন মেসেজেই আশ্বস্ত হলে মুশকিল। প্রতারণার জাল বিস্তৃত বহুদূর। এমন কোনো মেসেজ পাওয়ার পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট চেক করাই বাঞ্ছনীয়। চটজলদি হলে ব্যাঙ্কের মোবাইল অ্যাপ হোক বা নেট ব্যাঙ্কিং, নয়তো ব্যাঙ্কে গিয়ে পাসবুক আপডেটের মাধ্যমে। কেন? চলুন শুনে নেওয়া যাক এক অভিনব প্রতারণার টাটকা উদাহরণ।

এমন মেসেজের কারণেই দিল্লি এক স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ী পড়েছেন এক প্রতারকের খপ্পরে। তিনিও মোবাইলে মেসেজ পেয়েছিলেন, ‘আপনার অ্যাকাউন্ট ক্রেডিট করা হয়েছে…’। কিন্তু পরে স্টেটমেন্ট দেখে মাথায় হাত। খুইয়েছেন প্রায় ৩ লক্ষ টাকা।

যে ভাবে ছড়ানো প্রতারণার জাল

দিল্লির বৃহত্তম সোনা ও রুপোর বাজার চাঁদনি চকের কুচা মহাজানিতে পাঁচ দশকের পুরনো একটি দোকান চালান নওয়ল কিশোর খাণ্ডেলওয়াল। গত সপ্তাহে অযোধ্যা ভ্রমণে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময় এক ব্যক্তি তাঁর দোকানে যোগাযোগ করেন। তাঁর ছেলের কাছে থেকে ১৫ গ্রাম ওজনের একটি সোনার হার কেনার কথা বলেন।

ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি কোনো কারণে দোকানে যেতে পারছেন না। তাই ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দেবেন। ব্যবসায়ী নিজের ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের তথ্য দিয়ে দেন ওই ব্যক্তিকে। কিছুক্ষণ পর তাঁর মোবাইলে মেসেজ আসে, ৯৩ হাজার ৪০০ টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে। নওয়ল নিজের ছেলেকে সেই স্ক্রিনশটটি পাঠিয়ে দেন। ওই ব্যক্তির দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে সোনার হারটি দিয়ে আসে ব্যবসায়ীর ছেলে।

পরের দিন একই ব্যক্তি বলে, তার ৩০ গ্রাম সোনার হার লাগবে। একই ভাবে অনলাইনে পেমেন্ট করার কথা জানায় ব্যবসায়ীকে। কিছুক্ষণ পর নওয়লের মোবাইলে এসএমএস আসে, তাঁর অ্যাকাউন্টে ১ লক্ষ ৯৫ হাজার ৪০০ টাকা জমা করা হয়েছে। আবারও হার হস্তান্তর করা হয়।

কিন্তু মোবাইল অ্যাপে স্টেটমেন্ট চেক করতেই মাথায় হাত। কোনো টাকা জমা করা হয়নি। ছেলেকে ব্যাঙ্কে গিয়ে খোঁজ নিতে বলেন নওয়ল। ব্যাঙ্ক জানায়, টাকা জমা হয়নি। এখানে, মজার বিষয়টি হল, নওয়লের ফোনে ব্যাঙ্কের অ্যাপ ইনস্টল করা ছিল, ফলে তাঁর ছেলে তাৎক্ষণিক ভাবে স্টেটমেন্ট চেক করতে পারেননি।

সমাধান কোথায়?

পরবর্তীতে থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও প্রতারকের নাগাল পায়নি পুলিশ। পরে জানা যায়, শুধু নওয়ল নন, বাজারে এবং অন্যত্র আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী একই ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

উল্লেখযোগ্য ভাবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাইবার ক্রাইম পোর্টালেও একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই ধরনের প্রতারণা সেই বিভাগে পড়ে না। এটি প্রতারণা এবং জালিয়াতির বিষয়। কেউ জাল করে একটি মেসেজ পাঠিয়েছে, এবং ব্যাঙ্ক পোর্টাল বা কোনো ওয়েব পোর্টাল ব্যবহার করা হয়নি। মামলাটি ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে পড়ে, কিন্তু সাইবার প্রতারণা আইনে নয়!

আরও পড়ুন: কেওয়াইসি আপডেট করুন ঘরে বসে! ব্যাঙ্কের শাখায় যাওয়ার দরকার কী

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.