বিবি ডেস্ক: কাজের অভাবে ঋণ শোধে সমস্যায় পড়ছেন কলেজ পাশ পড়ুয়ারা। ফলে বেড়ে চলেছে ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদ (NPA)। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা ঋণ দেওয়ায় কড়াকড়ি শুরু করেছে ব্যাঙ্কগুলি।
কেন এই সমস্যা
দেশের শিক্ষা ঋণের (Education Loan) প্রায় ৯০ শতাংশ দেয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে সেই ঋণেই বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র তথ্য অনুযায়ী, অগস্টে দেশে বেকারত্ব (Unemployment) ছুঁয়েছে ৮.২৮ শতাংশ। এর মধ্যে শহরে বেকারত্বের (Unemployment) পরিমাণ (৯.৫৭ শতাংশ) গ্রামের (৭.৬৮ শতাংশ) চেয়ে বেশি। অর্থাৎ শহরের ব্যাঙ্কগুলি থেকে পাওয়া শিক্ষা ঋণের শোধ হওয়ার পরিমাণ কম। বিশষেজ্ঞদের মতে এই সমস্যার মূলে রয়েছে সেই বেকারত্বই।
যে বিপুল মানবসম্পদকে ভারতের আশীর্বাদ বলে মনে করা হত, চড়া বেকারত্বের কারণে যে তা-ই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে তা বার বারই বলছেন রঘুরাম রাজন, কৌশিক বসুর মতো অর্থনীতিবিদেরা। সেই সমস্যারই প্রতিফলন এ বার দেখা যাচ্ছে ব্যাঙ্কিং শিল্পে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কাজের অভাবেই ঋণ শোধে সমস্যায় পড়ছেন কলেজ পাশ পড়ুয়ারা।
কেন শোধ হচ্ছে না ঋণ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যত পড়ুয়া কলেজ পাশ করে কাজের জগতে পা রাখছেন, সেই অনুপাতে কাজ তৈরি হচ্ছে না। ফলে সময়ে শোধ হচ্ছে না শিক্ষা ঋণ। যে কারণে বাড়ছে বকেয়া। এই অবস্থায় ব্যাঙ্কগুলিও এই ঋণ দেওয়ায় দ্বিধা বোধ করছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য পড়ুয়ারাও ঋণ পাচ্ছেন না বা ঋণ বণ্টনে দেরি হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রক সম্প্রতি শিক্ষা ঋণ দেওয়ায় দেরি নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির কর্তাদের বৈঠক ডেকেছিল। সেখানে শিক্ষা ঋণে ভর্তুকি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোয় জোর দেওয়া হয়।
ঋণ পাওয়ার শর্ত কী
পড়াশোনার জন্য যে শিক্ষা ঋণ দেওয়া হয়, তার মধ্যে চার লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোনও বন্ধক লাগে না। সাড়ে সাত লক্ষ পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রেও বন্ধক লাগে না, তবে গ্যারান্টর লাগে। তার বেশি ধার নিলে বন্ধক দিতে হয়। প্রতি ক্ষেত্রেই অভিভাবককে যৌথ ভাবে ঋণের আর্জি জানাতে হয়। সাধারণত পড়া শেষের ছয় মাস থেকে এক বছর পরে ঋণ শোধ শুরু হয়। ১০-১৫ বছরের জন্য ঋণ দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, এর মধ্যে সাড়ে সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দানের ক্ষেত্রেই দ্বিধা বোধ করছে ব্যাঙ্কগুলি। এই অবস্থায় জাতীয় শিক্ষা নীতি ঠিক মতো কার্যকর হলে দক্ষতা ভিত্তিক পাঠ্যক্রম ও কাজ তৈরির হাত ধরে সমস্যা কিছুটা মিটতে পারে।
আরও পড়ুন: গৃহঋণের ইএমআই দিতে ব্যর্থ? জানুন কী থেকে কী হতে পারে
Discover more from banglabiz
Subscribe to get the latest posts sent to your email.