টাটা পাওয়ার গ্রুপের সংস্থা টাটা পাওয়ার ইভি চার্জিং সলিউশনস লিমিটেড (TPEVCSL) দেশে ইলেকট্রিক যানবাহন ব্যবহারের প্রচারের অংশ হিসেবে কলকাতা এয়ারপোর্ট অথরিটির সঙ্গে হাত মেলাল বিমানবন্দরে ইভি চার্জিং পয়েন্ট বসাতে।
চারটি ইভি চার্জারের (DC-CCS2 এবং সিঙ্গল গান GB/T চার্জার) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর)। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অতিথিরা, যার মধ্যে আছেন এয়ারপোর্টে ডিরেক্টর, কলকাতা, সি পট্টভি; এএআই কলকাতার জয়েন্ট জিএম কমার্শিয়াল দীপক কুমার এবং টাটা পাওয়ারের হেড অফ বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ফর ইভি চার্জিং বীরেন্দ্র গোয়েল। আরও ছিলেন রামকৃষ্ণ সিং, হেড বিজনেস অপারেশনস, ইভি চার্জিং, টাটা পাওয়ার। এই অতি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে এয়ারপোর্ট অথরিটিজ অফ ইন্ডিয়া এবং টাটা পাওয়ারের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। এই চার্জারগুলি এ দেশে যত ইলেকট্রিক কার পাওয়া যায় সবই চার্জ করার উপযুক্ত।
এক বিস্তৃত EV চার্জিং নেটওয়ার্ক তৈরি করতে টাটা পাওয়ার এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প চালু করেছে যা দিয়ে পরিবেশবান্ধব পরিবহনের প্রতি এবং সার্বিক দেশজোড়া চার্জিং পরিকাঠামোর গড়ে তোলায় কোম্পানির দায়বদ্ধতা আরও দৃঢ় হয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে টাটা পাওয়ারের হেড অফ বিজনেস ডেভেলপমেন্ট (EV চার্জিং) বীরেন্দ্র গোয়েল বললেন “কলকাতা এয়ারপোর্টের সঙ্গে আমাদের যৌথ উদ্যোগ এই শহর এবং তার আশপাশের এলাকায় শক্তিশালী ইভি চার্জিং নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার কাজে আমাদের সামনের সারিতে জায়গা করে দিল। এটি সুস্থায়ী গতিশীলতার প্রতি আমাদের অবিচল একনিষ্ঠতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করল। আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল ব্যক্তিদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ইলেকট্রিক যানবাহন আপন করে নেওয়ার শক্তি দেওয়া, সংশ্লিষ্ট সকলকে এক মসৃণ ও নির্ঝঞ্ঝাট অভিজ্ঞতা জোগানো।”
সি পট্টভি, এয়ারপোর্টে ডিরেক্টর, কলকাতা, টাটা পাওয়ারের উদ্যোগগুলির প্রশংসা করে বলেন এগুলি সুস্থায়ী গতি পাওয়ার দিকে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। “পাবলিক পার্কিং এরিয়ায় ইভি চার্জিং পরিকাঠামো প্রতিষ্ঠা কেবল ইলেকট্রিক যানবাহন ব্যবহারকারীদের সুবিধাই বাড়াবে না, পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি এক দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধতাও প্রমাণ করল।” আমরা টাটা পাওয়ারের সঙ্গে জুটি বাঁধতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত, কারণ তাদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য, কলকাতাকে এক পরিচ্ছন্নতর এবং পরিবেশ সম্পর্কে আরও সচেতন শহরে রূপান্তরিত করার যে লক্ষ্য আমাদের আছে, তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এইভাবেই এক সুস্থায়ী ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যাবে এবং ভারতের EV বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা এই রাজ্যের আছে তাকে শক্তি জোগানোও সম্ভব হবে।
এই চার্জিং স্টেশনগুলির জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিকল্পনা করে, স্বাচ্ছন্দ্যকে এবং বিমানবন্দর বা আশপাশের এলাকার যাত্রীদের নাগালকে অগ্রাধিকার দিয়ে। এই সুচিন্তিত দৃষ্টিভঙ্গি বিমানবন্দরের মধ্যেও এক নির্ঝঞ্ঝাট চার্জিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে। বিমানবন্দর শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলির অন্যতম হওয়ায় এই চার্জারগুলি কৌশল করে এমন সব জায়গায় বসানো হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষ অতুলনীয় স্বাচ্ছন্দ্য পাবেন। ফলে কার্যত EV-র আওতায় থাকা নিয়ে যে উদ্বেগ তা দূর হবে।
টাটা পাওয়ার ইতিমধ্যেই যথেষ্ট এগিয়ে গেছে। কলকাতা জুড়ে ৫০+ পাবলিক ও সেমি-পাবলিক চার্জিং স্টেশন বসানো হয়েছে। এর ফলে ভারতের সবচেয়ে বড় ইভি চার্জিং পয়েন্ট অপারেটর হিসাবে টাটা পাওয়ারের স্থান মজবুত হয়েছে। এই কোম্পানি এখন বাজারের প্রায় ৬০% দখল করে নিয়েছে। টাটা পাওয়ারের বিস্তৃত দেশজোড়া নেটওয়ার্কে আছে ৫৮,০০০ হোম চার্জার, ৪,৮০০ পাবলিক ও সেমি-পাবলিক চার্জিং পয়েন্ট এবং ৪৩০ বাস চার্জিং স্টেশন যা ছড়িয়ে আছে ৪২০+ শহরে। এই নেটওয়ার্ক ক্রমশ নিজের আওতা বাড়িয়ে চলেছে।
টাটা পাওয়ার ও কলকাতা এয়ারপোর্ট অথরিটির যৌথ উদ্যোগ সুস্থায়ী জীবনযাত্রা গড়ে তোলার প্রগতিতে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। কারণ এটি কেবল ব্যাপক হারে ইলেকট্রিক যানবাহন গ্রহণ করার প্রচারই করে না, কলকাতাকে আরও পরিচ্ছন্ন এবং আরও পরিবেশবান্ধব শহরে রূপান্তরিত করার যে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য টাটা পাওয়ারের রয়েছে তার সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ। এই জুটি ভারতের ইলেকট্রিক যানবাহন বিপ্লব এগিয়ে আনার যে সার্বিক লক্ষ্য তাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখল।
আরও পড়ুন: ৯ লক্ষ টাকার গৃহঋণে মিলবে ভরতুকি! নতুন প্রকল্প আনছে মোদী সরকার
Discover more from banglabiz
Subscribe to get the latest posts sent to your email.