করোনা আর মূল্যবৃদ্ধির জোড়া ধাক্কা, অনেক কমেছে গ্রামীণ বাজারের বিক্রিবাটা

market

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ (Second Wave of Covid) কাঁপিয়ে দিয়েছিল গ্রামীণ বাজারকে। সেই ক্ষতই এখনও ভাল ভাবে মোছেনি। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করা এই বাজারকে এ বার ভয় ধরাচ্ছে করোনার চলতি স্ফীতির পূর্বাভাস। সম্প্রতি প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, গ্রামীণ বাজারে (Rural Economy) ভোগ্যপণ্যের বিক্রি অনেকটাই কমেছে।

কী বলছে সমীক্ষা

উপদেষ্টা সংস্থার সমীক্ষায় বলছে, গ্রামাঞ্চলের নড়বড়ে অর্থনীতি এবং চড়া মূল্যবৃদ্ধি দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের ব্যবসাকে চরম অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে। যার মধ্যে রয়েছে চা-কফি, বিস্কুট, কেকের মতো নানা রকম প্যাকেটের খাবার থেকে শুরু করে ব্রাশ, পেস্ট, সাবান, প্রসাধনী-সহ হাজারও বস্তু। গাঁ-গঞ্জে সেগুলির বিক্রি বৃদ্ধির হার চলতি অর্থবর্ষে তো বটেই, থমকে যেতে পারে পরের বারও। তা কমাও অসম্ভব নয়। যদিও মূল্যবৃদ্ধি আরও মাথা নামালে এবং কৃষিতে ফলন ভাল হলে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা ভোগ্যপণ্য শিল্পের একাংশের। তবে তারাও সতর্ক।

ভোগ্যপণ্য ব্যবসার (প্রায় ৪.৭০ লক্ষ কোটি টাকা) ৪০ শতাংশ হয় গ্রামের বাজারে। উপদেষ্টা ক্রিসিল সেগুলির ৭৬টি বিক্রেতা সংস্থাকে নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিল, যাদের ওই বাজারে অংশীদারি প্রায় ৩৫ শতাংশ। রিপোর্ট বলছে, গত অর্থবর্ষে (Financial Year) টাকার অঙ্কে সংস্থাগুলির ব্যবসা বৃদ্ধির হার ছিল সাড়ে ৮ শতাংশ। এই হার চলতি এবং আগামী অর্থবর্ষে তা ৭-৯ শতাংশে আটকাতে পারে। বিক্রির পরিমাণের নিরিখে ব্যবসা বাড়তে পারে ১ থেকে ২ শতাংশ। গত বছরের আড়াই শতাংশের নিরিখে যা কম।

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

ক্রিসিলের (CRISIL) সিনিয়র ডিরেক্টর অনুজ শেঠির মতে, গত এক বছরে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা শ্লথ রয়েছে। প্রধান কারণ, দাম প্রায় ৮ শতাংশ বাড়ায় গ্রামে চাহিদার ঝিমুনি। সার্বিক ভাবে ব্যবসা বৃদ্ধির গতি কমিয়েছে ক্রেতার ছোট প্যাকেট কেনার ঝোঁক।

ডাবর ইন্ডিয়ার (Dabur India) সিইও মোহিত মালহোত্রর অবশ্য আশা, ভাল চাষবাস, সরকারি হস্তক্ষেপ এবং কৃষি থেকে আয় বৃদ্ধির হাত ধরে নতুন বছরে ঘুরে দাঁড়াবে গ্রামীণ বাজার। তবে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সতর্কতার সঙ্গেই আমরা আশাবাদী।’’ চড়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন ইমামির ভাইস চেয়ারম্যান মোহন গোয়েন্‌কার বক্তব্য, কাঁচামালের দাম কমার ইতিবাচক ফল আগামী বছরের আগে মিলবে না। ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ়ের (Britannia Industries) এমডি বরুণ বেরি বলছেন, একমাত্র পাম তেলের দামই কমেছে। তবে বাকি কাঁচামালও সস্তা হওয়ার আশায় তিনি। গ্রামীণ বাজার চাঙ্গা হওয়ার অপেক্ষায় ম্যারিকো-র এমডি-সিইও সৌগত গুপ্তও।

আরও পড়ুন: ইপিএফ-এ ন্যূনতম মাসিক পেনশন কি বাজেটে বাড়তে পারে?

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.