নয়াদিল্লি: পঞ্চম দিনেও কাজ হল না সংসদে। শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং রাহুল গান্ধীর বক্তব্য নিয়ে সংসদে অচলাবস্থা। লোকসভা এবং রাজ্যসভা, সংসদের উভয় কক্ষই সোমবার অর্থাৎ ২০ মার্চ স্থগিত করা হয়েছে।
শুক্রবার, সংসদ স্থগিত হয়ে যাওয়ার পরে, কংগ্রেস সাংসদরা সংসদ ভবন কমপ্লেক্সে গান্ধী মূর্তির কাছে বিক্ষোভ দেখান এবং সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। কংগ্রেসের দাবি, মোদী সরকার সংসদ চলতে দিচ্ছে না। এটা আদানি মামলা থেকে জনগণের দৃষ্টি সরানোর কৌশল।
অন্য দিকে, কেমব্রিজ বিতর্কের জেরে রাহুল গান্ধীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য জোর দিচ্ছে বিজেপি। ১৩ মার্চ বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হলেও হট্টগোলের কারণে একদিনের জন্যও সংসদের কার্যক্রম শেষ করা যায়নি। সংসদের এই পর্বে ৩৫টি বিল মুলতুবি রয়েছে।
শাসক দলের সাংসদদের হট্টগোল নিয়ে সরকারকে নিশানা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, গত ৫ দিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের সাংসদরা সংসদ চলতে দিচ্ছে না। সরকার উভয় কক্ষকে অপ্রাসঙ্গিক ও অন্ধকার প্রকোষ্ঠে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়েছে। এটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এক কীর্তিও।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, ২০০৮ সালের পর এই প্রথম সংসদের কার্যক্রম স্থগিত করতে হল ক্ষমতাসীন দলের হট্টগোলের কারণে। ২০০৮ সালে, সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থনকারী বাম দলগুলি আমেরিকার সঙ্গে ভারতের পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে প্রচুর হইচই করেছিল। পরে সরকারকে আস্থা ভোট যেতে হয়। সমাজবাদী পার্টি তখন বাইরে থেকে সমর্থন দিয়ে মনমোহন সরকারকে বাঁচিয়েছিল।
সংসদের সূত্র জানাচ্ছে, ১৩ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত লোকসভার কার্যবিবরণী মাত্র ৪২ মিনিট স্থায়ী হতে পেরেছে। লোকসভা টিভি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ১৩ মার্চ ৯ মিনিট, ১৪ মার্চ ৪ মিনিট, ১৫ মার্চ ৪ মিনিট, ১৬ মার্চ ৩.৩০ মিনিট এবং ১৭ মার্চ, প্রায় ২২ মিনিট সংসদ চলেছে।
একই ভাবে ১৩ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যসভার কার্যবিবরণী মাত্র ৫৫ মিনিট স্থায়ী হতে পেরেছে। লোকসভা টিভি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ১৩ মার্চ ২১ মিনিট, ১৪ মার্চ ১১ মিনিট, ১৫ মার্চ ১৬ মিনিট, ১৬ মার্চ ৪ মিনিট এবং ১৭ মার্চ, মাত্র ১৪ মিনিট সংসদ চলেছে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, সংসদে এক ঘণ্টার জন্য খরচ হয় দেড় কোটি টাকা। যদি এক দিনের ভিত্তিতে যোগ করা হয়, তা হলে এই ব্যয় ১০ কোটি টাকার বেশি হয়ে যায়। সংসদে এক মিনিটের কার্যবিবরণীর খরচ আড়াই লক্ষ টাকা। সেই হিসেবে ১৩-১৭ মার্চ, এই পাঁচ দিনের জন্য ব্যয় হওয়ার কথা প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: এ বার ‘অসংরক্ষিত’ ট্রেন টিকিট কাটতে নতুন অ্যাপ ভারতীয় রেলওয়ের