বিবি ডেস্ক: সরকারি তথ্য বলছে, ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে আবগারি (Liquor Revenue) খাতে রাজ্যের ভাঁড়ারে এসেছিল ৩৫৮৭ কোটি টাকা। ২০২১-২২ সালে ১৩,৫৪৩ কোটি। অর্থাৎ, বছরে রাজস্ব (Revenue) বৃদ্ধি গড়ে প্রায় ২১ শতাংশ করে। অন্য রাজ্যগুলিতে যা ১০ শতাংশও পেরোয়নি। অথচ পশ্চিমবঙ্গে মদ খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে মাত্র ৪-৫ শতাংশ। কী ভাবে এই ‘ম্যাজিক’ সম্ভব হল তা জানতে এ বার নবান্নের দ্বারস্থ হল বেশ কয়েকটি রাজ্য। এর মধ্যে রয়েছে একাধিক বিজেপি-শাসিত রাজ্যও।
কোন কোন রাজ্য আগ্রহী
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যের থেকে এই কৌশল রপ্ত করতে আগ্রহী মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, সিকিম এবং পঞ্জাবের মতো রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের আবগারি দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন সে সব রাজ্যের প্রতিনিধিরা। এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রায় ১২টি রাজ্য আমাদের পদ্ধতি কার্যকর করার পথে এগোচ্ছে। এখন দিল্লি সরকারের একটি দল এখানে রয়েছে।’’
দেশে জিএসটি চালুর পরে রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা সীমিত হয়ে গিয়েছে সব রাজ্যের। নিজস্ব আয়ের অন্যতম মূল উৎস এখন কার্যত আবগারি। ফলে বেশ কয়েক বছর ধরে এই ক্ষেত্র থেকে রাজস্ব সংগ্রহে বাংলার অগ্রগতি দেখে আশান্বিত বহু রাজ্য। রাজকোষ শক্তিশালী করতে সাফল্যের সেই পথের হদিশ চায় তারা।
কী করেছে আবগারি দফতর
আবগারি দফতর জানিয়েছে, ২০২০-২১ সালের (দীর্ঘ সময় ছিল লকডাউন) এপ্রিল-অগস্টে তাদের রাজস্ব আদায় হয় ৩৫০০ কোটি টাকা। গত এপ্রিল-সেপ্টেম্বরে ৭৪৩৪ কোটি। প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। লকডাউনে কিছু দিন রাজ্য মদের দামে কোভিড কর যুক্ত করলেও সে বার পুরো অর্থবর্ষের মোট আদায় ১২,৩৭১ কোটি ছুঁয়েছে। কর্তাদের বক্তব্য, জিএসটি (GST) জমানায় রাজ্যের নিজস্ব আয় বৃদ্ধির প্রয়োজন বেড়েছে। না হলে সমাজকল্যাণ বা জনস্বাস্থ্য প্রকল্পগুলি চালানো মুশকিল হবে। তাই এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তি নির্ভর কিছু নীতি নিয়েছে সরকার। যেমন—
এক, ই-আবগারি পোর্টাল মারফত মদ সংক্রান্ত সরকারি অনুমোদনের সময় সর্বাধিক ৪৮ ঘণ্টায় নামানো। দুই, অনলাইনে টাকা লেনদেন। ফলে ভুয়ো চালানের প্রবণতা কমেছে। তিন, ৫৩০০ খুচরো বিক্রেতার ই-আবগারি মারফত চাহিদা অনুযায়ী মদ সংগ্রহের সুবিধা। চার, উৎপাদক সরবরাহকারীকে যে দামে মদ বিক্রি করছে, তার প্রতিটি স্তরে আলাদা আলাদা ভাবে কর ধার্য হওয়া। আগের কর কাঠামোয় মদের এমআরপি বেশি হলে কর আদায় হত কম।
এর ফলে কী হয়েছে
আবগারি দফতরের এক সূত্র বলছে, দামের সামঞ্জস্য ভিন্ রাজ্য থেকে বেআইনি পথে মদ আসা বন্ধ করেছে। সেই কারণেও রাজস্ব মার খাচ্ছে না। সরকারি কর্তাদের দাবি, কম দামে সুগন্ধি দেশি মদের জোগান বৃদ্ধি আদায় আরও বাড়িয়েছে। কারণ, এতে চোলাই বা অবৈধ বিক্রিতে অনেকটা রাশ টানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভাল কাজের ভিত্তিতে বেতন বৃদ্ধি, বিমা ক্ষেত্রে নয়া নিয়ম আনতে চায় কেন্দ্র