
যখন চেকে “অর বিয়ারার” (or Bearer) লেখা থাকে তখন তাকে বিয়ারার চেক বলে। বিয়ারার চেক যে কোনো ব্যাক্তি ব্যাঙ্কে জমা করলেই ব্যাঙ্ক তাকে টাকা দিতে বাধ্য, তাই এ ধরনের চেকে ঝুঁকি বেশি। যে কারণে বিয়ারার চেক সাধারণত ব্যবহার করা হয় না। তবে, আপনি যদি এ ধরনের একটি চেক পান তবে কী ভাবে তা হলে কয়েকটি বিষয় জেনে নেওয়া উচিত।
বিয়ারার চেক নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন
আপনি কি বিয়ারার চেকটি ব্যবহার করে কোন টাকা তুলতে পারবেন বা এর কোনো সীমা আছে? বিয়ারার চেক ব্যবহার করে নগদ তোলার জন্য কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন? টাকা পাওয়ার জন্য বিয়ারার চেক ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কী কী ঝুঁকি রয়েছে? বিয়ারার চেক ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক থেকে নগদ তোলার জন্য আয়কর আইনের অধীনে কোনো নিয়ম আছে কি?
একটি বিয়ারার চেক ব্যাঙ্কের যে কোনো শাখায় ভাঙানো যেতে পারে। চেকের বাহককে চেকে উল্লিখিত পরিমাণ দিতে অস্বীকার করতে পারে না ব্যাঙ্ক। যে শাখাটি বহনকারী চেকটি গ্রহণ করে সে ব্যাঙ্কের মূল শাখায় একটি স্ক্যান কপি ফরোয়ার্ড করে। একবার প্রধান শাখা এটি নিশ্চিত করলে চেক বহনকারী পেমেন্ট পায়।
বিয়ারার চেক ইস্যু করা এবং ক্লিয়ার করার জন্য কোনো পরিষেবা চার্জ লাগে না।
সাধারণভাবে, একটি বিয়ারার চেকের মাধ্যমে টাকা তোলার কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। তবে, জালিয়াতি এবং অপব্যবহার এড়াতে, প্রতিটি ব্যাঙ্ক নিজের গ্রাহকদের গচ্ছিত অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে চলে। এর মধ্যে রয়েছে দৈনিক টাকা তোলার সীমা, যাচাইকরণের জন্য ফোন কল, চেক নম্বর যাচাইকরণ ইত্যাদি। অনেক ব্যাঙ্কে গ্রাহকদের বেশি টাকার বিয়ারার চেকের ক্ষেত্রে আগাম জানিয়ে দিতে বলে। যাতে তারা পর্যাপ্ত নগদের ব্যবস্থা করতে পারে।
বেশি টাকার বিয়ারার চেকের ক্ষেত্রেও কেওয়াইসি প্রক্রিয়া মেনে চলা জরুরি। চেকটি যদি বেশ টাকার হয় তা হলে কেওয়াইসি বাধ্যতামূলক। প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং নিয়ম অনুযায়ী, ৫০ হাজার টাকার সমান বা তার বেশি সমস্ত লেনদেনের জন্য গ্রাহকের পরিচয় যাচাই করতে হয় ব্যাঙ্ককে। ফলে একটি বিয়ারার চেক নগদ করার জন্য একটি কেওয়াইসি প্রক্রিয়া করতে বলতে পারে। একজন ব্যক্তিকে একটি ছবি-সহ পরিচয়ের প্রমাণ, ঠিকানা প্রমাণের জন্য নথি জমা করতে হবে। তবে, যদি পরিমাণ ৫০ হাজার টাকার কম হয় তবে কেওয়াইসি বাধ্যতামূলক নয়।
আয়কর আইন, ১৯৬১-র ধারা ২৬৯এসটি অনুযায়ী, টাকার পরিমাণ ২ লক্ষের বেশি হলে এক দিনে দুই পক্ষের মধ্যে কোনো নগদ লেনদেন করা যাবে না৷ এইভাবে, যদি একজন ব্যক্তি ২ লক্ষ টাকার বেশি একটি বিয়ারার চেক নগদ করেন, তা হলে তিনি আয়কর আইনের ধারা ২১৭ডিএ-এর অধীনে জরিমানা দিতে দায়বদ্ধ থাকবেন। জরিমানাটি নগদে লেনদেনের পরিমাণের সমতুল্য এবং নগদ প্রাপককে তা মেটাতে হবে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ, তালিকা তৈরিতে প্যানেল গঠন করছে কেন্দ্র!