কলকাতা: ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা বাড়ছে। সামঞ্জস্য রেখে ব্যাঙ্কগুলিও সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করছে গ্রাহকদের। এই কার্ডের মাধ্যমে পণ্য ও পরিষেবা কিনতে পারেন গ্রাহক। সময়মতো যা পরিশোধ করে দিতে হয় ইস্যুকারী ব্যাঙ্ককে।
তবে বলতে বা শুনতে যতটা সহজ, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা কিন্তু ততটাও সহজ নয়। সে যতই লোভনীয় হোক না কেন। কেনাকাটায় লাগাম এবং সময়মতো ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পরলে ঝঞ্ঝাট বাড়ে। এমনও দেখা যায়, ক্রেডিট কার্ডের সঠিক ব্যবহার না করায় আর্থিক সংকটে পড়েছেন অনেক স্বচ্ছল ব্যক্তিও। ফলে এই কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিজের ব্যয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখাটাও জরুরি।
নগদের ব্যবহার কমিয়ে ক্যাশলেস লেনদেনের উপর জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই মতোই আকর্ষণীয় অফার দিচ্ছে ব্যাঙ্ক এবং অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এ সময়ে ডিজিটালাইজেশনের একটি বড়ো উপকরণ ক্রেডিট কার্ড। ব্যবহারকারীর সংখ্যাও দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির কারণ বহুবিধ। যেগুলির মধ্যে অন্যতম ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক, রিওয়ার্ড পয়েন্ট, গিফট কার্ড, ভাউচার ইত্যাদি। আসুন জেনে নেওয়া যাক, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পাওয়া সুবিধাগুলি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
ক্রেডিট কার্ডের ৫টি অন্যতম সুবিধা
১. আগে কেনাকাটা, পরে বিল মেটানো
ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটার বিল পেমেন্ট করার জন্য ১ মাসের গ্রেস পিরিয়ড পাওয়া যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দিনের হেরফেরও হয়। এটা সাধারণত ১৮ দিন থেকে ৫৫ দিন পর্যন্ত হতে পারে। ফলে আগে কেনাকাটা করে পরে বিল মেটানোর সুযোগ পাওয়া যায় ক্রেডিট কার্ডে।
২. ক্রেডিট কার্ডের উপর ঋণ
ক্রেডিট কার্ডের বিল সময়মতো পরিশোধ করলে ক্রেডিট স্কোর ভালো থাকে। এতে করে কোনো ঋণ নিতে ততটা সমস্যা হয় না। ফলে সময়মতো বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিলে অন্য যে কোনো প্রয়োজনে আপনি ক্রেডিট কার্ডের উপর ঋণ নিতে পারেন। ঋণের পরিমাণ নির্ভর করে ইস্যুকারীর নির্দিষ্ট শর্তের উপর।
৩. বিমার সুবিধা, আলাদা প্রিমিয়াম নেই
নির্দিষ্ট কিছু ক্রেডিট কার্ডের উপর গ্রাহককে বিমার সুবিধা দিয়ে থাকে ইস্যুকারী সংস্থা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। টার্ম অথবা দুর্ঘটনাজনিত বিমার সুবিধা পাওয়া যায়। উল্লেখযোগ্য ভাবে, এর জন্য আলাদা করে কোনো প্রিমিয়াম দিতে হয় না।
৪. অনলাইন কেনাকাটায় ছাড়ের সুবিধা
ক্রেডিট কার্ডে অনলাইন কেনাকাটায় বিভিন্ন রকমের সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন ক্যাশব্যাক, গিফট কার্ড, ভাউচার, ডিসকাউন্ট, ফুয়েল রিচার্জে পুরস্কার ইত্যাদি।
৫. বড়ো কেনাকাটায় সহজ কিস্তি
কোনো বড়ো কেনাকাটার ক্ষেত্রে তিন থেকে ৪৮ মাসের সহজ কিস্তিতে সেই টাকা পরিশোধ করতে পারেন। এতে এক সঙ্গে পুরো টাকা শোধ করার ঝক্কি থাকে না। ফলে গ্রাহক নিজের পকেট-পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন।
যা মাথায় রাখতে হবে
আগেই বলা হয়েছে, ক্রেডিট ব্যবহারে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। কার্ড ইস্যুকারী আপনার খরচের একটি সীমা বেঁধে দেয়। সেই সীমার উপর খরচ করা যায় না। তবে এ ক্ষেত্রে নিজেও একটা সীমা নির্ধারণ করতে হবে। মানে, আয় বুঝে ব্যয়। কত টাকা ধার নিলেন, সেটা সবসময় মাথায় রাখতে হবে।
এ ছাড়াও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঋণের টাকা শোধ করতে হবে। সম্ভব হলে অটো ডেবিটের সুবিধা নিন। এতে ব্যাঙ্ক থেকে সরাসরি ক্রেডিট কার্ডের পেমেন্ট হয়ে যায়। অনেক কার্ডে নগদ টাকা তোলার সুবিধা রয়েছে। এই বিকল্প এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ, এতে ঋণের বহর ক্রমশ ফুলেফেঁপে ওঠে।
আরও পড়ুন: আপনার চেকের পুরো দায়িত্ব আপনারই, এমনকী অন্য কেউ লিখলেও, পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের
Discover more from banglabiz
Subscribe to get the latest posts sent to your email.