ভারতে দুধের গড় খুচরো মূল্য এক বছর আগের তুলনায় বেড়েছে ১২ শতাংশ। বর্তমানে এই গড় দাম লিটার প্রতি ৫৭.১৫ টাকা। ব্লুমবার্গের একটি রিপোর্ট অনুসারে, দুধের দামবৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে বিভিন্ন কারণ। যেমন খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গবাদি পশুর খাদ্য আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। করোনা মহামারির সময় খাদ্যভাবের কারণে দুগ্ধউৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটেছিল বলেও ধারণা বিশ্লেষকদের।
ব্যবহারের পরিমাণের দিক দিয়ে ভারতীয়দের খাদ্যতালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দুধ। সাম্প্রতিক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্যমাত্রার ৬ শতাংশের নীচে নেমেছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। মূল সুদের হার বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। তবে দুধের মূল্যবৃদ্ধি রয়ে গিয়েছে ৯.৩১ শতাংশে।
গবাদি পশুর খাদ্যশস্য এবং পশু খাদ্যে উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত ধানের তুষের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে গরুপালনকারীদের একাংশ হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারই প্রভাব পড়েছিল এ বারের শীতের মরশুমে। ওই সময় ১২-১৫ শতাংশ হারে দুধের দাম বেড়েছিল। এরই মধ্যে অসময়ের বৃষ্টি এবং তাপপ্রবাহও খাদ্যের দামে প্রভাব ফেলেছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধি ১৫.২৭ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলেছে।
মহামারির জেরে লকডাউনের সময় অনেক রেস্তোরাঁ এবং মিষ্টির দোকান সাময়িক বা স্থায়ী ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুধ এবং দুগ্ধপণ্যের চাহিদা কমে গিয়েছে। বলে রাখা ভালো, বিশ্বের দুধ সরবরাহের এক চতুর্থাংশ পূরণ করে ভারত। কিন্তু এ দেশে দুগ্ধ উৎপাদনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস ছোটো উৎপাদকরা। চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে যাঁরা নিজেদের গবাদি পশুকে ঠিক ভাবে খাওয়াতেও পারেননি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুধ এবং সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলির এই মূল্যবৃদ্ধি আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য রাজনৈতিক ঝুঁকিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতীয় ডেয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আর এস সোধি জানান, “দুধের দাম বেশি হওয়ার এই প্রবণতা সমস্যাযুক্ত, কারণ এটি একটি উচ্চ মূল্যের স্থিতিস্থাপক পণ্য এবং ব্যবহারের দিক থেকে এটা সরাসরি প্রভাব ফেলে।” আপাতত, চাহিদা এবং সরবরাহের অমিল রয়েছে। বিশ্লেষকরা আশা করছেন, এই পরিস্থিতি বৃহত্তম সংস্থাগুলির ব্যবসা আরও প্রসারিত করতে সাহায্য করতে পারে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি এবং সুরক্ষা বিমা যোজনায় প্রচারে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র