৩ মাসে ইডি-র উদ্ধার ১০০ কোটি! কোথায় যাবে এই বিপুল পরিমাণ টাকা?

বিবি ডেস্ক: বেশ কয়েকটি মামলার তদন্তে অভিযান চালিয়ে গত তিন মাসে প্রায় ১০০ কোটি টাকা নগদ বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)।

গার্ডেনরিচে ১৭ কোটির বেশি

এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল গলির পরিবহণ ব্যবসায়ী নিসার খানের বাড়িতে ইডির অভিযান। মোবাইল গেমিং অ্যাপ্লিকেশন সংক্রান্ত জালিয়াতির মামলায় তাঁর ছোটো ছেলে আমির খানের বিরুদ্ধে তল্লাশি চালাতে গিয়ে খাটের তলা থেকে ১৭ কোটি টাকার বেশি উদ্ধার করেছেন ইডি আধিকারিকরা।

টালিগঞ্জ, বেলঘরিয়ায় প্রায় ৫০ কোটি

এর আগে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু’টি ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করেছিল ইডি। টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে ২২ কোটির পরে বেলঘরিয়ায় অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছিল।

ঝাড়খণ্ডে ২০ কোটি

এই ঘটনার কয়েক দিন আগেই ঝাড়খণ্ডে খনি কেলেঙ্কারির তদন্তে ২০ কোটি টাকার বেশি নগদ বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। অবৈধ খনি-কাণ্ডের তদন্তে প্রকাশের বাড়ি ছাড়াও ঝাড়খণ্ড, বিহার, তামিলনাড়ু এবং দিল্লির ১৬টি জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি।

কোথায় যাবে এই ১০০ কোটি টাকা?

শেষ তিন মাসে এগুলি ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা নগদের মোট পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি টাকা। কোথায় যাবে এই বিপুল পরিমাণ টাকা?

আর্থিক তদন্তকারী সংস্থাকে অর্থ বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিন্তু, তারা উদ্ধার করা নগদ নিজেদের কাছে রাখতে পারবে না। প্রোটোকল অনুসারে, যখনই সংস্থা নগদ উদ্ধার করে, অভিযুক্তকে নগদ অর্থের উৎস ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেওয়া হয়। সন্দেহভাজন ব্যক্তি যদি সঠিক উত্তর দিয়ে ব্যর্থ হয়, তা হলে ওই নগদকে হিসাববিহীন নগদ এবং অবৈধ ভাবে অর্জিত অর্থ হিসাবে গণ্য করা হয়।

টাকা গোনার জন্য ডাকা হয় স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার আধিকারিকদের। গণনা শেষ হলে বাজেয়াপ্ত হওয়া টাকার অঙ্ক উল্লেখ করে একটি লিস্ট তৈরি করা হয়। কোন টাকার কতগুলি নোটের বান্ডিল রয়েছে, তা সঠিকভাবে লিখে রাখা হয়। ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের উপস্থিতিতেই এই তালিকা তৈরি করা হয়।

সিজার মেমোতে মোট উদ্ধারকৃত নগদ পরিমাণ এবং নোটের নোটের বিবরণ থাকে। আধিকারিকদের প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে রেখে বাজেয়াপ্ত হওয়া টাকা ট্রাঙ্কে কিংবা বস্তায় ঢোকানো হয়। এরপর সেগুলি সিল করা হয়। উদ্ধারকৃত নগদ সেই রাজ্যের স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার শাখায় পাঠানো হয়, যেখানে এই টাকা ইডি-র একটি পার্সোনাল অ্যাকাউন্টে (পিডি) জমা করা হয়।

সেই অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকারের কোষাগারে এই নগদ জমা হয়। তবে ইডি, ব্যাঙ্ক বা সরকার কেউই এই টাকা ব্যবহার করতে পারে না। এর পর বিচারাধীন মামলার বিচারপতিকে দিয়ে এই বাজেয়াপ্ত হওয়া টাকার পরিমাণ নিশ্চিত করানো হয়। ছ’মাসের মধ্যে সে কাজ করতে হয় ইডি-কে। যতক্ষণ না পর্যন্ত বিচারপতি তা নিশ্চিত করছেন, ততক্ষণ ব্যাঙ্কেই জমা থাকে এই টাকা। মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্টেট ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টেই জমা রাখা হয়।

অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হলে নগদ অর্থ কেন্দ্রের সম্পত্তি হয়ে যায়। অন্য দিকে আদালত যদি অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দেয়, তা হলে নগদ টাকা তাঁকে ফেরত দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: বিকল্প আয়ের পথ খুঁজছেন? তা হলে এই ৫টি টিপসে চোখ বুলিয়ে নিন

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.