মঙ্গলবার থেকে নিউ টাউনে বিশ্ব বঙ্গ কনভেনশন সেন্টারে বসতে চলেছে সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (BGBS 2023)। এই শিল্প সম্মেলনের মাধ্যমে রাজ্যে বিনিয়োগ টানতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গল-বুধবার ( ২১ ও ২২ নভেম্বর) শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে বাংলায়। রাজারহাটের বিশ্ববাংলা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে আজ শুরু হচ্ছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। এই সম্মেলনে বিনিয়োগ কতটা আসে, আপাতত সেটাই নজরে।
এদিন বিকেল তিনটে নাগাদ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উপলক্ষ্যে দেশ-বিদেশের নামকরা শিল্পপতিরা পা রাখবেন শহরে। তাঁদের সামনে পশ্চিমবঙ্গকে শিল্পবান্ধব রাজ্য হিসাবে তুলে ধরতে প্রস্তুত রাজ্য সরকার। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ২৮টি দেশ এই সম্মেলনে যোগদান করার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছে। ব্রিটেনের একটা বড় টিম আসছে বাংলায়। সেক্ষেত্রে এবার ব্রিটেন থেকে বড় বিনিয়োগ আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশ-বিদেশের একাধিক নামকরা শিল্পপতিরাও এ দিনের শিল্প সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে চলেছেন। জানা গিয়েছে, আজ দুপুরেই কলকাতা পৌঁছে সরাসরি নিউ টাউনের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে আসবেন রিলায়েন্স গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি। এছাড়া গোয়েঙ্কা গোষ্ঠীর চেয়ারপার্সন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, আইটিসি-র এমডি সঞ্জীব পুরী, টিসিজি গ্রুপের পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, রিয়েল এস্টেটের অন্যতম কর্ণধার হর্ষবর্ধন নেওটিয়া, জিন্দাল গ্রুপের কর্ণধার সজ্জন জিন্দাল-সহ রাজ্য ও দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতিরা উপস্থিত থাকবেন।
তবে আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারপার্সন গৌতম আদানিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। একইভাবে নিশ্চিত নয় হীরানন্দানি। যদিও এ দিনের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে সেখানে অবশ্য হীরানন্দানি গোষ্ঠীর কর্ণধারের নাম উল্লেখ রয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর আদানি গোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধি দল এ দিনের সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে চলেছে।
দুপুর ৩টে থেকে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। মূল অনুষ্ঠানের পর হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। তার চূড়ান্ত প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। এবারের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে অন্যতম ফোকাস রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। নবান্নের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের মতে, এবার বাণিজ্য সম্মেলন থেকে কয়েক লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ আসতে চলেছে। নতুন বিনিয়োগ টানার জন্য বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রকে পাখির চোখ করছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, কৃষি এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পর্যটন, টেক্সটাইলস-ইঞ্জিনিয়ারিং, রিয়েল এস্টেট, তথ্য-প্রযুক্তি এবং উচ্চশিক্ষা।
গত বছর বিশ্ববঙ্গ সম্মেলন থেকে ৩.৪২ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছিল। এবার বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়বে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদী রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। বিজিবিএস-এর তরফে এক্স (আগের টুইটার)-এ জানানো হয়েছ, এই শিল্প সম্মেলন রাজ্যের ভবিষ্যৎ-অর্থনীতির শ্রীবৃদ্ধির নির্ধারক হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে বাংলা বিশেষ প্রভাব ফেলবে।
প্রসঙ্গত, এই নিয়ে সপ্তমবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারেও বাণিজ্য সম্মেলনের মাধ্যমে রাজ্যে বিনিয়োগ, শিল্প স্থাপনের পরিবেশের বিষয়টি উদ্যোগপতিদের সামনে তুলে ধরা হবে। শিল্প টানার জন্য নিজেই বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।