বন্ধন ব্যাঙ্কের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মূল ৩ পদক্ষেপের কথা জানালেন চন্দ্রশেখর ঘোষ

sourav chandra sejkhar

কলকাতা: ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Sourav Ganguly) ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত করল বন্ধন ব্যাঙ্ক (Bandhan Bank)। বৃহস্পতিবার কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে এই ঘোষণা করলেন ব্যাঙ্কের এমডি ও সিইও চন্দ্রশেখর ঘোষ।

সৌরভকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ করায় ব্যাঙ্কের পণ্য ও পরিষেবাগুলিকে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে বলে আশাপ্রকাশ করেন চন্দ্রশেখর ঘোষ (Chandra Sekhar Ghosh)। অন্য দিকে, নিজের কেরিয়ারে লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে বন্ধনের সাফল্য অর্জনের ভূয়সী প্রশংসা করেন সৌরভ। একটি ক্ষুদ্র ঋণ সরবরাহকারী সংস্থা থেকে এখন বেসরকারি ব্যাঙ্কের স্বীকৃতি পেয়েছে বন্ধন।

দীর্ঘস্থায়ী লক্ষ্য

sourav bandhan

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেই ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে চন্দ্রশেখর ঘোষ বলেন, “এর চেয়ে ভালো বিকল্প আর কী হতে পারত? এটাই সবচেয়ে ভালো ম্যাচিং”।

তিনি বলেন, “সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বন্ধন ব্যাঙ্কের মূল্যবোধ ও চিন্তাভাবনার মধ্যে অনেক সামঞ্জস্য রয়েছে। তিনি একজন আন্তর্জাতিক আইকন এবং সব মহলের কাছে সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। সৌরভকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত করায় বন্ধন ব্যাঙ্কের প্রতি আরও আকৃষ্ট হবেন গ্রাহকরা। সাধারণকে যে আরও বেশি সচেতন করে তুলতে পারব, সে বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। এ ভাবেই আমাদের উত্তরণ আরও এগিয়ে যাবে। গ্রাহকদের সঙ্গে দৃঢ় সংযোগ স্থাপনে এটা আরেকটি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ আমাদের লক্ষ্যকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে”।

সৌরভ বলেন, “আমি অনেক কাছ থেকে বন্ধন ব্র্যান্ডের উত্থান দেখেছি। এত অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাঙ্কের এই অগ্রগতিতে আমি গর্বিত। আমি ব্যাঙ্ক সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টির প্রশংসা করি তা হল, এর নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য রয়েছে। সেটা ধরেই এগিয়ে চলেছে। গ্রাউন্ড লেভেলে টেকসই প্রভাব তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বন্ধন ব্যাঙ্ক। এটার সঙ্গে আমারও খুব মিল। আমিও বরাবরই দীর্ঘস্থায়ী লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছি। প্রথমে একজন অধিনায়ক এবং এখন একজন প্রশাসক হিসাবে কাজ করছি। বন্ধন ব্যাঙ্ককে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পেয়ে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান হিসেবে মনে করি”।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে, ক্ষুদ্র ঋণ সরবরাহকারী হিসেবে দেশের বৃহত্তম এমএফআই (MFI) হিসাবে স্বীকৃত পায় বন্ধন। ২০০৬ সালে, বন্ধন নিজের ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানোর জন্য এনবিএফসি (NBFC) তালিকাভুক্ত হয়। ২০১৫ সালের ১৭ জুন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) সর্বজনীন ব্যাঙ্কিং লাইসেন্স প্রদান করে বন্ধন ব্যাঙ্ককে।

বন্ধন ব্যাঙ্কের মূল ৩ লক্ষ্য

bandhan

চন্দ্রশেখর ঘোষ বলেন, “বন্ধন মোটেই গতানুগতিক ব্যাঙ্কের মতো কাজ শুরু করেনি। এর লক্ষ্য ছিল অনন্য। মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া এবং কর্মসংস্থান তৈরিতে আমরা ব্যতিক্রমী। আপাতত আমরা তিনটি পদক্ষেপে জোর দিচ্ছি”।

ভবিষ্যতের মূল তিন পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রথমত, ক্ষুদ্র, ছোটো ও মাঝারি উদ্যোগীদের (MSME) জন্য আরও বেশি করে পরিষেবা। পাশাপাশি আমাদের লক্ষ্য এখন গৃহঋণের (Housing finnace) দিকেও। যেটা যে কোনো মানুষের একটা প্রাথমিক চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম”।

তিনি জানান, “বন্ধন ব্যাঙ্কে বর্তমানে কাজ করছেন ৬৫ হাজার কর্মী। বর্তমানে বন্ধন ব্যাঙ্কের গ্রাহক সংখ্যা ২.৬৯ কোটি। ৫৬৪০টি ব্যাঙ্কিং আউটলেটের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক এই সমন্ত গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা দিয়ে চলেছে। আরও বেশি আউটলেট খোলাই হল ব্যাঙ্কের দ্বিতীয় মূল লক্ষ্য”।

তৃতীয় লক্ষ্য হিসেবে তিনি বলেন, “গ্রাহকদের আরও সুবিধা দেওয়ার জন্য সেরা ডিজিটাল পরিষেবা বাস্তবায়িত করার পদক্ষেপ নিয়েছে ব্যাঙ্ক। যেখানে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে ঋণ পাওয়ার আবেদন আরও সহজে জানাতে পারবেন সাধারণ গ্রাহক। আমরা সারা দেশ থেকে যে ভালোবাসা, সমর্থন এবং বিশ্বাস পেয়েছি তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। গ্রাহকদের প্রতি বন্ধন ব্যাঙ্কের অঙ্গীকার অটুট থাকবে। আমরা সকলের সমর্থন নিয়ে আমাদের বৃদ্ধির পরবর্তী পর্যায়ের দিকে এগিয়ে চলেছি”।

আরও পড়ুন: খুচরো মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৭.৪১ শতাংশ, আবারও কি সুদের হার বাড়াবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.