গত বছর হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্টের ফলে বড়োসড়ো ধাক্কা খেয়েছিল আদানি গ্রুপ। সেখান থেকে যে সংস্থা পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটাই প্রমাণিত হল সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা রিপোর্টে। ব্যবসায়ী গৌতম আদানির মোট সম্পদ ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার বেড়ে ১০০৭০ কোটি ডলার হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই সমীক্ষা।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, গৌতম আদানি বর্তমানে বিশ্বের দ্বাদশতম ধনী ব্যক্তি। তাঁর সম্পদ প্রায় ১০১০০ কোটি ডলার। এমনিতে গত সপ্তাহে, আদানিক ফ্ল্যাগশিপ কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজ ১৩০ শতাংশ মুনাফা অর্জন করেছে। কোম্পানির শেয়ার গত আট দিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী।
অন্য দিকে, এই তালিকায় এক ধাপ নীচে রয়েছেন রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ অম্বানি। গত কয়েকদিনে তাঁর সম্পদও রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। এক্ষেত্রে গৌতম আদানি হয়তো অম্বানিকে ছাড়িয়ে গেছেন কিন্তু তিনি এখনও ২০২২ সালে তাঁর সর্বোচ্চ সম্পদের চেয়ে ৫০০০ কোটি ডলারের নীচে রয়েছেন।
নিউইয়র্ক-ভিত্তিক হিন্ডেনবার্গ গত বছরের জানুয়ারিতে ভারতের আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলে। তবে আদানি গোষ্ঠী শুরু থেকে বারবার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসার পর শুধু আদানি গোষ্ঠী নয়, পুরো শেয়ার বাজারে চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। কোটি কোটি টাকা খোয়াতে হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে রাজনীতিও।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ জানিয়েছিল, বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝা রয়েছে আদানি গোষ্ঠীর ঘাড়ে। তাছাড়া তাদের শেয়ারের ভ্যালুয়েশনও মাত্রাতিরিক্ত। ফলে যে কোনো সময়ে ভেঙে পড়তে পারে তাসের ঘর। মার্কিন সংস্থার ভয়ানক রিপোর্টের পরেই টলে যায় আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার। সেই ঘটনায় আদানি গোষ্ঠী প্রকৃতপক্ষে সেবি-র নিয়মের ১৯ নম্বর ধারার কোনো ভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে কি না এবং শেয়ারের দামে কোনো ভাবে কারচুপি হয়েছে কি না, সেই সমস্ত বিষয়ে তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আদানি-হিন্ডেনবার্গ বিরোধ সম্পর্কিত মামলায় বড় রায় গেয় সুপ্রিম কোর্টের। বিভিন্ন পিটিশনের উপর রায় দেওয়ার সময় সিট-এর কাছে মামলার তদন্তভার স্থানান্তর করতে অস্বীকার করে সর্বোচ্চ আদালত। তিন মাসের মধ্যে এই মামলার তদন্ত শেষ করতে সেবি-কে নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। আদালত বলে, মামলার বাস্তবতা দেখলে মনে হয় না তদন্তটি বিশেষ তদন্তকারী দল বা অন্য কোনো সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা উচিত।
আরও পড়ুন: এলআইসি ইনডেক্স প্লাস: জীবন বিমার পাশাপাশি সঞ্চয়ের সুবিধা