কখনও কখনও জরুরি পরিস্থিতিতে বড় অঙ্কের টাকার দরকার হয়। এমন পরিস্থিতিতে আমরা ব্যক্তিগত ঋণ নিই অথবা এফডি (ফিক্সড ডিপোজিট) ভেঙে টাকা তুলে নিতে বাধ্য হই। কোনো কোনো সময় এই বিকল্পগুলোও থাকে না। তা ছাড়া এ সবের জন্য কাগজপত্রের কাজ সারতেও সময় লাগে। আপনি যদি এই আর্থিক ক্ষতি অথবা সময় অপটয় না করে আপনার অর্থের চাহিদা মেটাতে চান, তাহলে আপনি ওভারড্রাফট লোন নিতে পারেন। আসুন জেনে নিই কী ভাবে ওভারড্রাফট লোন নিতে হয় এবং এর সুবিধাগুলি কী?
ওভারড্রাফ্ট ঋণ (OD) কী?
এটি আসলে একটি আর্থিক পরিষেবা। কিন্তু, ব্যাঙ্ক থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরেই আপনি এটি পেতে পারেন। ব্যাঙ্কগুলি প্রায়শই কারেন্ট অ্যাকাউন্ট, স্যালারি অ্যাকাউন্ট এবং ফিক্সড ডিপোজিট (এফডি)-এর উপর ভিত্তি করে ওভারড্রাফট সুবিধা দিয়ে থাকে।
এতে আপনি অ্যাকাউন্টে থাকা ব্যালেন্সের চেয়ে বেশি টাকা তোলার সুবিধা পাবেন। এই সুবিধায়, আপনি যে পরিমাণ ধার নিয়েছেন তা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। এর উপর ধার্যকৃত সুদ দৈনিক ভিত্তিতে গণনা করা হয়।
ওভারড্রাফটে কত টাকা পাওয়া যায়?
ওভারড্রাফটে কত টাকা পাওয়া যাবে, সেটা ব্যাঙ্ক নির্ধারণ করবে। মূলত অ্যাকাউন্ট হিস্ট্রি, পেমেন্ট রেকর্ড বা ক্রেডিট স্কোরের উপর নির্ভর করে ব্যাঙ্ক টাকার পরিমাণ অনুমোদন করবে। আপনার যদি স্যালারি অ্যাকাউন্ট থাকে, আপনি বেতনের দ্বিগুণ বা এমনকি তিনগুণ টাকা পেতে পারেন। এই সুবিধার জন্য একটি বার্ষিক ফিও আছে। গ্রাহক যখন খুশি এই পরিষেবা বন্ধ করতে পারেন।
ওভারড্রাফটের সুবিধা কী?
এতে বহুবিধ সুবিধা পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, একটি ব্যক্তিগত ঋণে, অনুমোদিত সম্পূর্ণ পরিমাণের উপর সুদ গণনা করা হয়। তবে, ওভারড্রাফট লোনে মঞ্জুরিকৃত পরিমাণের উপর আপনাকে সুদ দিতে হবে না। আপনি অ্যাকাউন্ট থেকে যে পরিমাণ টাকা তুলবেন এবং ব্যবহার করবেন, তার উপর সুদ দিতে হবে।
মনে রাখবেন, এই সুদ শুধুমাত্র আপনার কাছে থাকা সময়ের জন্য চার্জ করা হবে। তার মানে, আপনি যত তাড়াতাড়ি ঋণ পরিশোধ করবেন, তত তাড়াতাড়ি আপনি কিস্তি থেকে মুক্তি পাবেন। দ্রুত ঋণ পরিশোধ করতে, ব্যক্তিগত ঋণের মতো, সময়ের আগে ঋণ বন্ধ করার জন্য প্রি-পেমেন্ট চার্জের মতো কোনো ঝামেলা নেই। এছাড়াও কোনো প্রসেসিং ফি দিতে হবে না, যা অন্য ঋণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে কী হবে?
আপনি যদি ওভারড্রাফটের টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ব্যাঙ্ক আপনার সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে বকেয়া টাকা তুলে নিতে পারে। ওভারড্রাফ্ট সুবিধার জন্য আবেদন করলে ক্রেডিট স্কোরের উপর কোনো বড় প্রভাব পড়ে না। কিন্তু, যদি আপনি সময়মতো টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে আপনার সিবিল স্কোর প্রভাবিত হবে।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাফ হয়ে যেতে পারে মুহূর্তের ভুলে, এটিএম কার্ড নিয়ে এই সতর্কতাগুলি মেনে চলুন