খবর
বাজেট কমে ১০ হাজার থেকে ২০০, বউবাজারের ব্যবসায়ীদের বিশ্বকর্মা পুজো কাটলো অন্ধকারে
ফুল মিষ্টি চাঁদ মালা কিংবা হাতে হাতে পেটকাটি-চাঁদিয়াল, এসব নিয়ে যখন শহরের আর পাঁচটা ব্যবসায়ী বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজনে মেতে তখন বিপর্যস্ত বউবাজারে এই পুজো কাটলো আঁধারেই। দুর্গা পিথুরি এবং সাকরা পাড়া লেনের আকাশে উড়ল না একটাও ঘুড়ি।

নিজস্ব প্রতিনিধি: ফুল মিষ্টি চাঁদ মালা কিংবা হাতে হাতে পেটকাটি-চাঁদিয়াল, এসব নিয়ে যখন শহরের আর পাঁচটা ব্যবসায়ী বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজনে মেতে তখন বিপর্যস্ত বউবাজারে এই পুজো কাটলো আঁধারেই। দুর্গা পিথুরি এবং সাকরা পাড়া লেনের আকাশে উড়ল না একটাও ঘুড়ি। প্রতিবছরের ১০ হাজার টাকার বিশ্বকর্মা পুজোর বাজেট এসে দাঁড়াল মাত্র ২০০ টাকায়। তবুও রুজি রুটি সংস্থানের জায়গাটা আবার ফিরে পাওয়ার আশায় বাণিজ্য দেবতার আরাধনা মগ্ন হলেন সর্বহারা ব্যবসায়ীরা।
৯৫ নম্বর বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট সোনার কারখানা ছিল পরিতোষ করের। পুরোপুরি ভেঙে না পড়লেও বড় বড় ফাটল ধরেছে তার কারখানায়। বউ বাজারে ধ্বস নেমে আসার ফলে রাতারাতি কারখানা বন্ধ করতে হয়েছে তাকে।
বাইরের রাজ্য থেকে তার কারখানায় কাজ করতে আসা শ্রমিকরা আজ আশ্রয়হীন ও বটে। প্রতিবছর ধুমধাম করে বিশ্বকর্মা পুজো পালিত হয় তার কারখানায়। পুলিশের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এলাকায় জল এবং আলোর লাইন বন্ধ থাকায় সে অনুমতি তিনি পাননি। বাধ্য হই তাই ধ্বংস হয়ে যাওয়ার দুর্গা পিথুরি লেনের পাশেই এক চিলতে দোকান ঘরের কোনায় কোনওরকমে বিশ্বকর্মা পুজো সারলেন পরিতোষ বাবু।
তিনি বলেন, “এবছর দেশি মুরগির মাংস আর ভাত মেনু ঠিক করা হয়েছিল বিশ্বকর্মা পুজোর রাতে। প্রতিমা, পুরোহিত মশাইয়ের দক্ষিণা, ফলমূল এবং সকলের খাবার মিলিয়ে প্রায় ১০-১২ হাজার টাকার বাজেট ছিল বিশ্বকর্মা পুজোয়। কিন্তু, সবকিছু হারিয়ে আমরা এখন পথে বসেছি আমরা। তাই ২০০ টাকায় নমঃ নমঃ করে পুজো করতে হল।”
এমনিতেই তো সোনার গয়না তৈরি বাজার মন্দা। তারমধ্যে গোদের উপর বিষ ফোড়ার মতো তৈরি হল মেট্রোর কাজের জন্য বাড়ি ভেঙে যাওয়ার সমস্যা।
দুর্গা পিথুরি এবং স্যাকরাপাড়া লেন মিলিয়ে মোট ২৫০ সোনার কারখানা ছিল। যেখানে প্রায় ৩০০০ কর্মচারী কাজ করতেন। এদের মধ্যে রয়েছে গলা শিল্পী, হলমার্ক শিল্পী এবং গয়না কারিগরেরা। যার মধ্যে সকলেই আজ কর্মহীন। প্রতি মাসে তাদের প্রায় ১৫-১৬ হাজার টাকা করে রোজগার হত।
স্বর্ণ কারিগর ছাড়াও বউবাজার এর একাধিক ছাপাখানাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলিতেও কোন রকমে আয়োজন করা হয়েছে বিশ্বকর্মার আরাধনা।
মেট্রোর কাজের জন্য বিপর্যস্ত বউবাজারে যেমন ধুঁকতে থাকা হোটেল ব্যবসা চাঙ্গা হয়েছে। তেমনি ধাক্কা খেয়েছে সোনার বাজার।