চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি মূল সুদের হার বা রেপো রেট বৃদ্ধি করেছিল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI)। সেই শেষ বার। তার পর থেকে আর সুদের হার বাড়ায়নি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। মূলত, অনুমানের চেয়ে বেশি মাত্রায় খুচরো মুদ্রাস্ফীতি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি-সহ বেশ কিছু কারণে একই স্তরে সুদের হার বজায় রেখেছে আরবিআই। অক্টোবরের শুরুতেই বৈঠকে বসছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতি কমিটি (MPC)। তার আগে প্রশ্ন একটাই, এ বার কি সুদের হার বাড়বে?
আগামী ৪-৬ অক্টোবর বৈঠকে বসছে আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের মুদ্রানীতি কমিটি। গত আগস্টে শেষ বার কমিটি বৈঠকে বসেছিল। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এই নিয়ে চতুর্থ বারের জন্য সুদের হারে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। এর নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণ। যেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য, উচ্চ হারে মুদ্রাস্ফীতি এবং মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্তের প্রভাব।
ব্যাঙ্ক অব বরোদার প্রধান অর্থনীতিবিদ মদন সবনবিসের মন্তব্য উদ্ধৃত করে টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে, “আমরা আশা করছি এই সময় স্থিতাবস্থা ধরে রাখবে আরবিআই। কারণ, মুদ্রাস্ফীতি এখনও যথেষ্ট বেশি। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে আরবিআই-এর পূর্বাভাস, তৃতীয় ত্রৈমাসিকেও যা ৫ শতাংশের উপরেই থাকবে। তাতে চতুর্থ ত্রৈমাসিকের জন্যও স্থিতাবস্থা নিশ্চিত করবে।”
তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, খরিফ শস্য সম্পর্কে অনিশ্চয়তা রয়েছে। বিশেষ করে ডালের দাম বাড়তে পারে। কিন্তু, স্বস্তির বিষয় হল, বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ কম।
উল্লেখ্য, কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI) ভিত্তিক খুচরো মূল্যবৃদ্ধি আগস্টে নেমে এসেছে ৬.৮৩ শতাংশে। যা জুলাই মাসে ছিল ৭.৪৪ শতাংশ। পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, এটা আরবিআই-এর স্বাচ্ছন্দ্য স্তর ৬ শতাংশের উপরেই ছিল। যেখানে, উপর-নীচে ২ শতাংশের মার্জিন-সহ মূল্যবৃদ্ধি ৪ শতাংশে ধরে রাখতে বাধ্য করেছে সরকার।
প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরের তৃতীয় বৈঠকে (৮-১০ আগস্ট) মূল সুদের হারকে আবার এক বার ৬.৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। স্বাভাবিক ভাবে, পর পর তিন বার সুদ না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ঋণগ্রহীতাদের জন্য বড়োসড়ো স্বস্তি এনেছিল। কারণ, ২০২২ সালের মে মাসের পর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কয়েক দফায় ২৫৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছিল রেপো রেট।
এমনিতেই গত দু’বছর ধরে আরবিআই যতবার রেপো রেট বাড়িয়েছে, অন্য ব্যাঙ্কগুলিও তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঋণের সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। এর ফলে গাড়ি, বাড়ি, পার্সোনাল লোনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি ইএমআই গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এমন পরিস্থিতিতে রেপো রেট আরও বাড়ানো হলে তা মধ্যবিত্ত শ্রেণির পকেটে বড় ধাক্কার সামিল!
আরও পড়ুন: আপনার প্যান কার্ড কি অনেক দিনের পুরনো? কখন পরিবর্তন করা দরকার