যুক্তরাষ্ট্র-চিন বাণিজ্যযুদ্ধের জের, ২০০৭ সালের পর সর্বনিম্ন দর ইউয়ানের

চলমান যুক্তরাষ্ট্র-চিন বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যেই চিনের মুদ্রা ইউয়ানের দাম ১৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। বুধবার দেশীয় বাজারে ইউয়ান প্রতি ডলারে ৭.৩৪৯৮ দামে বন্ধ হয়েছে, যা ২০০৭ সালের ডিসেম্বরের পর সবচেয়ে দুর্বল অবস্থা।

এই পতনের কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত “পারস্পরিক” শুল্ক নীতিকে দায়ী করছেন। বুধবার থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হয়েছে, যার আওতায় চিন থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ১০৪% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

চিনা কর্তৃপক্ষ দ্রুত অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে এবং পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে চিনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউয়ানের হঠাৎ বড় পতন ঠেকাতে চেষ্টা করছে এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে ডলার ক্রয় কমাতে নির্দেশ দিয়েছে।

‘ক্যাপিটাল ইকোনমিকস’ জানিয়েছে, নতুন শুল্ক নীতির কারণে চিনের রপ্তানি অর্ধেকে নেমে আসতে পারে এবং জিডিপি ১.০% থেকে ১.৫% পর্যন্ত কমে যেতে পারে। তবে সরকার সম্ভাব্য ক্ষতি সামাল দিতে রাজস্ব ব্যয় বাড়াতে পারে।

এশিয়ার বাজারে অফশোর ইউয়ান সামান্য ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রতি ডলারে ৭.৩৭৬৯ পর্যন্ত পৌঁছেছে, যদিও আগের রাতে এটি ৭.৪২৮৮-এর রেকর্ড নিম্নস্তরে পৌঁছেছিল।

চিনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুধবার ইউয়ানের রেফারেন্স রেট নির্ধারণ করে ৭.২০৬৬, যা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের পর সবচেয়ে দুর্বল রেট। এর ফলে ইউয়ান সর্বোচ্চ ৭.৩৫০৭ পর্যন্ত দুর্বল হতে পারে।

ডলারের চাহিদা কমাতে বুধবার সকালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সক্রিয়ভাবে ডলার বিক্রি করেছে। তবে চলতি মাসে ইউয়ানের মান ১%-এর বেশি কমেছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, চিন শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় ইচ্ছাকৃতভাবে ইউয়ানের মূল্যহ্রাস ঘটাচ্ছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দুর্বল ইউয়ান রপ্তানিকে প্রতিযোগিতামূলক করে তুললেও অতিরিক্ত পতন পুঁজি বহির্গমন ও আর্থিক স্থিতিশীলতার ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.