ভারতের বেঞ্চমার্ক সূচক সেনসেক্স এবং নিফটি এই বছর বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৩-১৫% ভালো রিটার্ন দিয়েছে। তবে এই উত্থান ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারছে না। চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) সেনসেক্স এবং নিফটি এক দিনের সবচেয়ে বড় পতনের মুখোমুখি হয়, যা গত দুই মাসের মধ্যে সবচেয়ে হতাশাজনক।
শেষ দুদিন ক্ষতির বহর
এই পতনের মূল কারণ হিসেবে উল্লেখযোগ্য বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীদের (এফপিআই) বিশাল পরিমাণে শেয়ার বিক্রি। ওই দিন তারা ১৫,২৪৩ কোটি টাকা তুলে নেয়, যা গত চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দৈনিক টাকা উত্তোলন। এর সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ার ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়, যার প্রভাব বাজারে পড়েছে।
শুক্রবারও সেনসেক্স এবং নিফটির পতন অব্যাহত ছিল, দুই সূচকই প্রায় ১% কমেছে। নিফটি ২৫,০০০ পয়েন্টের নিচে নেমে আসে এবং দিনশেষে ২৫,০১৫ পয়েন্টে, অর্থাৎ ২০০ পয়েন্টেরও বেশি বা ০.৯০% পতন নিয়ে বন্ধ হয়।
টানা পাঁচদিনের পতন
পশ্চিম এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে শেয়ারবাজারে টানা পাঁচদিন ধরে বিক্রি চলছে, যার ফলে ভারতের শেয়ার বাজারে লাগাতার পতন দেখা গেছে। এই পাঁচ দিনে বিএসই-এর প্রধান সূচক সেনসেক্স ৪,১৪৭.৬৭ পয়েন্ট পড়ে গিয়ে ৮২ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। একইভাবে, এনএসই-র নিফটি ১,২০১.৪৫ পয়েন্ট পড়েছে, তবে এটি এখনও ২৫ হাজার পয়েন্টের উপরে রয়েছে।
এই পাঁচদিনে বিনিয়োগকারীদের মোট সম্পদ ১৬.২৬ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিএসই-তে তালিকাভুক্ত সমস্ত কোম্পানির মোট বাজার মূলধন কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬০.৮৯ লাখ কোটি টাকা বা ৫.৪৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
বিনিয়োগকারীদের নজরে রাখা উচিত
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে বাজারে সতর্ক মনোভাবের কারণে সমন্বয় থাকতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সাবধানতা থাকবে। এছাড়া, পরবর্তী সপ্তাহে আয়ের মরশুম শুরু হওয়ায় স্টকভিত্তিক ওঠানামা দেখা যাবে। রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (RBI) নীতি বৈঠকের আগে সুদ সংবেদনশীল শেয়ারগুলোর দিকে নজর থাকবে। যদিও সুদের হার কমানোর কোনো সম্ভাবনা নেই, তবে বৈঠকের সময়ের বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।