বিবি ডেস্ক: অবশেষে ভারতের বাজারে এল ই-রুপি (E Rupee)। আগামী কাল থেকে দেশের বাছাই করা চার শহরে শুরু হবে এই ডিজিটাল মুদ্রা (Digital Rupee) পরিষেবা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (Reserve Bank Of India) দাবি, এর ফলে নগদ ছাপানোর খরচ কমবে। পাশাপশি নগদে লেনদেনের উপর নজর রাখাও সহজ হবে। কিন্তু আমজনতার কাছে এখনও পরিষ্কার নয় এই মুদ্রা ঠিক কী? কী ভাবে এটি কাজ করবে? এর সুবিধা, অসুবিধাই বা কী?
ই-টাকা কী
ই-টাকা (E Rupee) হল আমরা যে নোট লেনদেনের জন্য ব্যবহার করি তার ডিজিটাল রূপ। এর জন্য ব্যবহারকারীর ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকা জরুরি নয়। এই টাকা ম্যানিব্যাগের বদলে থাকবে আপনার মোবাইলের ডিজিটাল ওয়ালেটে। নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির ই-টাকার ওয়ালেট আপনাকে মোবাইলে ডাউনলোড করতে হবে।
আপনার টাকা আপনি ই-টাকায় বদলে এই ওয়ালেটে রাখতে পারবেন এবং তা ব্যবহার করতে পারবেন প্রথাগত টাকা লেনদেন যে ভাবে করেন সে ভাবেই। শুধু ম্যানিব্যাগ থেকে নোট না বার করে আপনার ওয়ালেট থেকে অন্যের ওয়ালেটে তা পাঠিয়ে দিতে হবে।
ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টেও নোটের বদলে ই-টাকা জমা দিতে পারবেন। এখন যে ভাবে কিউআর কোড (QR Code) স্ক্যান করে আপনি ওয়ালেট থেকে টাকা দেন, ঠিক সে ভাবেই লেনদেন করতে পারবেন। অথবা প্রাপকের ওয়ালেট আইডি-তে পাঠাতে পারবেন ই-টাকা (E Rupee)। সুবিধাটা হল এই লেনদেন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নির্ভর নয়। নগদে যে ভাবে বাজার করেন, সে ভাবেই ব্যবহার করবেন এই ওয়ালেট। ফারাক হবে শুধু মাধ্যমের।
কেন ই-টাকা
এর ফলে দেশের টাকা ছাপার খরচ কমবে। কিন্তু টাকার উপর শীর্ষ ব্যাঙ্কের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এর ফলে নগদ বয়ে বেরানোর ঝক্কিও থাকবে না। প্রথাগত নগদের লেনদেনের উপর সরকারের নজরদারি যেমন কঠিন, তা কিন্তু এই লেনদেনে থাকবে না।
কোন কোন দেশে ই-মুদ্রা চালু আছে
বাহামাস, সেন্ট কিটস, গ্রেনাডা, অ্যান্টিগার মতো কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে ই-মুদ্রা। রাশিয়ায় পরীক্ষামূলক ব্যবহার শেষ হয়ে সবার ব্যবহারের জন্য চালু হওয়ার রাস্তা। চিনও তৈরি। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিও এ নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছে।
সুবিধা এবং অসুবিধা
ডিজিটাল লেনদেনের বর্তমান ব্যবস্থায় প্রতিটি লেনদেনের জন্য আপনাকে একটা কমিশন দিতে হয় যার ওয়ালেট ব্যবহার করছেন তাকে। ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড (Credit Card) ব্যবহার করলেও একই ভাবে আপনাকে কিছু দাম দিতে হয় যার কার্ড ব্যবহার করছেন তাকে। ই-টাকার (E Rupee) লেনদেনে এই খরচ থাকবে না বলে শীর্ষ ব্যাঙ্কের দাবি। ই-টাকায় (E Rupee) আপনি তাৎক্ষণিক দাম চোকানোর সুবিধা পাবেন এবং কোনও তৃতীয় মাধ্যম দিয়ে সেই লেনদেন পরিচালিত হবে না। ঠিক যে ভাবে নগদ লেনদেন পরিচালিত হয় সে ভাবেই চলবে গোটা প্রক্রিয়াটি। প্রয়োজনে লেনদেনের উপর সরকার নজরও রাখতে পারবে সহজে। আপনার মানিব্যাগে নগদ ফুরানোর চাপও থাকবে না। ঘন ঘন এটিএমে দৌড়নোর চাপও কমে যাবে।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল মুদ্রা চালু ১ ডিসেম্বর, জানুন কোন কোন ব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া যাবে