আজ, সোমবার এই নিয়ে চতুর্থ দিনের মতো ধসের মুখে পড়েছে ভারতীয় শেয়ারবাজার। অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি, ভারতীয় মুদ্রা রুপির দুর্বলতা এবং বিদেশি বিনিয়োগ বেরিয়ে যাওয়ার ফলে বাজারে এই অবস্থা দেখা যাচ্ছে।
সেনসেক্স ও নিফটির অবস্থা
- সেনসেক্স: আজ ৭৬,৬২৯.৯০ পয়েন্টে খুলেছিল, কিন্তু দ্রুত ৯৫০ পয়েন্ট পড়ে ৭৬,৪২৮.২৮-এর নিম্নতম পর্যায়ে পৌঁছায়।
- নিফটি ফিফটি: ২৩,১৯৫.৪০ পয়েন্টে খোলা হয়েছিল এবং ৩২০ পয়েন্ট পড়ে ২৩,১০৯-এ পৌঁছায়।
মিডক্যাপ ও স্মলক্যাপ সেগমেন্টেও ব্যাপক পতন লক্ষ্য করা যায়।
মোট বাজারমূল্য: বিএসই-তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলোর বাজারমূল্য ৪৩০ লক্ষ কোটি থেকে কমে ৪১৭ লক্ষ কোটিতে নেমে এসেছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা একদিনে ১৩ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছেন।
ধসের ৮টি প্রধান কারণ
তেলের মূল্যবৃদ্ধি
রাশিয়ার তেলের সরবরাহ হ্রাসের আশঙ্কায় তেলের দাম তিন মাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
মার্কিন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার তেল ও গ্যাস থেকে আয়ে প্রভাব ফেলছে, যা ভারত ও চিনের মতো আমদানিকারকদের উপর প্রভাব ফেলেছে।
ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি ঘিরে অনিশ্চয়তা
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য দ্বিতীয় মেয়াদে উচ্চ শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা এশিয়ার অর্থনীতির উপর চাপ বাড়াচ্ছে।
বিদেশি পুঁজির ব্যাপক বিক্রি
জানুয়ারি মাসে এখন পর্যন্ত ২১,৩৫০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।
২০২৫ বাজেটের আগে সতর্কতা
বাজেট যদি গত বছরের মতো জনমুখী হয়, তবে বাজারে আরও নিম্নগতি দেখা যেতে পারে।
মার্কিন ফেড রেট কাটের আশার অভাব
মার্কিন অর্থনৈতিক ডেটা শক্তিশালী হওয়ায় ২০২৫ সালে সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেড রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ।
নরম ত্রৈমাসিক আয়ের প্রত্যাশা
Q3 আয়ে উল্লেখযোগ্য উন্নতির অভাব বাজারে চাপ বাড়াচ্ছে।
মন্দার শঙ্কা
ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬.৪ শতাংশে নেমে আসতে পারে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
বিশ্বের অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো এইচএসবিসি ভারতীয় শেয়ারবাজারকে ‘নিউট্রাল’ থেকে ‘ওভারওয়েট’-এ ডাউনগ্রেড করেছে। আইএমএফও জানিয়েছে, ২০২৫ সালে ভারতের অর্থনীতি কিছুটা দুর্বল হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের বাজারে সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।