নয়াদিল্লি: ব্যাঙ্কগুলির নন-পারফরমিং অ্যাসেট (NPA) কমেছে। আর্থিক স্থিতিশীলতা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্য়াঙ্কের (RBI)। ওই রিপোর্ট অনুসারে ব্যাঙ্কগুলির মোট এনপিএ ৫ শতাংশে নেমে এসেছে, যা সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দাবি
আরবিআই নিজের ফিনান্সিয়াল স্টেবিলিটি রিপোর্টে (FSR) বলেছে, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা শক্তিশালী এবং একই সঙ্গে এই ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত পুঁজিও রয়েছে। যেখানে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির সামনে একটি বড়ো আকারের মন্দার ঝুঁকি মাথার ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, একের পর এক ধারাবাহিক ধাক্কার কারণে, আর্থিক পরিস্থিতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং আর্থিক বাজারে অস্থিরতা বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের অর্থনীতি প্রতিকূল বৈশ্বিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। তা সত্ত্বেও, ভারতের আর্থিক ব্যবস্থা নিজের শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং স্বাস্থ্যকর আর্থিক এবং অ-আর্থিক ক্ষেত্রের শক্তিশালী ব্যালেন্স শিটের কারণে একটি ভাল অবস্থানে রয়েছে।
এই রিপোর্টের ভূমিকায় আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বিশ্বব্যাপী ঝুঁকির কারণে অস্থিতিশীলতার সম্ভাবনাকে স্বীকার করে। তিনি বলেন, “ভারতীয় অর্থনীতির সর্বোত্তম স্বার্থে, যখনই প্রয়োজন হয়, উপযুক্ত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে আর্থিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আর্থিক নিয়ন্ত্রকেরা সজাগ এবং প্রস্তুত।
বিনিয়োগ চক্রের উন্নতি এবং ঋণের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ব্যাঙ্কগুলির সম্পদের গুণমান, ক্রমবর্ধমান মুনাফা, মূলধন এবং নগদ প্রাপ্যতা দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়াও এনপিএ সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।
প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা
অন্য দিকে, দেশের ব্যাঙ্কগুলির খাতায় বাড়তে থাকা অনাদায়ী ঋণ এবং তা সকলের অগোচরে মুছে ফেলার বিষয়ে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। প্রশ্ন উঠছে, গত পাঁচ বছরে এনপিএ অর্ধেক মাত্রায় নামিয়ে আনতে কি ১০ লক্ষ কোটি টাকার অনাদায়ী ঋণ মুছে ফেলা হয়েছে ব্যাঙ্কের খাতা থেকে, যেখানে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ মাত্র ১.৩২ লক্ষ কোটি টাকা আদায় করতে পেরেছেন বকেয়া ঋণ থেকে?
সম্প্রতি রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ জহর সরকার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে লিখিত ভাবে পেশ করা প্রশ্নের মাধ্যমে জানতে চান,২০০৮-১৪ সালের মধ্যে যেখানে দেশের ব্যাঙ্কগুলির এনপিএ ৫ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছিল, সেখানে মোদী সরকারের আমলে পরের ছ’বছরে তা কি সত্যিই ৩৬৫ শতাংশ বেড়ে ১৮ লক্ষ কোটি টাকা ছাপিয়ে গিয়েছে? এমন প্রশ্নে সরাসরি জবাব না দিয়ে নির্মলা জানান, এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট সংসদে পেশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেড়ে চলেছে ঋণ, ক্রমশ কমছে বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার, চিন্তা বাড়ছে মোদী সরকারের