এপ্রিলের মুদ্রানীতি কমিটি (MPC) বৈঠকে আরেক দফা সুদহার কমানোর পথে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI) । এমনটাই মনে করছে ব্যাংক অব আমেরিকা (BofA) গ্লোবাল রিসার্চ। সংস্থাটি আশা করছে যে আরবিআই রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট (bp) কমিয়ে ৬ শতাংশে নিয়ে আসবে। বিওএফএ জানিয়েছে, আগামী কয়েক মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ৪ শতাংশের নিচে থাকতে পারে এবং বিনিময় হার সংক্রান্ত চাপও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা সুদহার কমানোর পথ পরিষ্কার করছে।
বিওএফএ বলেছে, স্থিতিশীল কিন্তু মূল্যস্ফীতির ঝুঁকিবিহীন প্রবৃদ্ধি এবং নিয়ন্ত্রিত মূল্যচাপ আরবিআই-কে সুদহার কমানোর পর্যাপ্ত সুযোগ করে দিচ্ছে। তবে সংস্থাটি সতর্ক করেছে যে, ২ এপ্রিল থেকে সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ কিছুটা প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতিকে প্রভাবিত করতে পারে, যদিও এটি এপ্রিলের এমপিসি সিদ্ধান্তে বড় প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
ধীর প্রবৃদ্ধি ও নিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি সুদ কমানোর পক্ষে
বিওএফএ জানিয়েছে, সামগ্রিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাস সুদহার কমানোর যুক্তিকে আরও জোরালো করছে। বর্তমানে আরবিআই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের (FY26) জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৭ শতাংশ ধরে রেখেছে, যা বিওএফএ-র ৬.৫ শতাংশ অনুমানের তুলনায় কিছুটা আশাবাদী। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পূর্বাভাস অনুযায়ী এই হার ৬.৩–৬.৮ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে। সংস্থাটি মনে করে, সাম্প্রতিক জিডিপি বেস বৃদ্ধির কারণে আরবিআই তার প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা নিচের দিকে সমন্বয় করতে পারে।
মূল্যস্ফীতির বিষয়ে, বিওএফএ মনে করছে যে আরবিআই তার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিক মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ৪.৪ শতাংশের তুলনায় ৪০–৬০ বেসিস পয়েন্ট কম রাখতে পারে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৪.২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি অনুমানও সংরক্ষিত বলে মনে করছে সংস্থাটি, কারণ অপরিশোধিত তেলের দাম কমছে, রুপির বিনিময় হার স্থিতিশীল এবং সামগ্রিক চাহিদা দুর্বল। গ্রীষ্মকালে তাপপ্রবাহ কিছুটা মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, তবে সংস্থাটি মনে করছে যে কৃষি উৎপাদন ভালো থাকলে এই চাপ নিয়ন্ত্রিত থাকবে। তাই বিওএফএ আশা করছে আরবিআই নিজের স্বল্পমেয়াদি মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস কমিয়ে ২০২৫-২৬ সালের জন্য ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) প্রায় ৪ শতাংশের মধ্যে রাখবে।
বিওএফএ মনে করছে যে আরবিআই সুদহার কমানোর পথেই থাকবে। ফেব্রুয়ারির এমপিসি বৈঠকেই এই নীতির সূচনা হয়েছে এবং এপ্রিলেও এটি অব্যাহত থাকবে বলে সংস্থাটির প্রত্যাশা। আরবিআই তার আর্থিক নীতির মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির গতি পুনরুদ্ধার করাকে অগ্রাধিকার দেবে, তবে মূল্যস্ফীতিকে ২-৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যে নীতিগত অবস্থান বজায় রাখবে।