ব্যাঙ্ক নয় এমন চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান (NBFC)-এর বিরুদ্ধে কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)। ২১ অক্টোবর, ২০২৪ থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
কেন এই পদক্ষেপ?
আরবিআই-এর তরফ থেকে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট, ১৯৩৪-এর সেকশন ৪৫এল(১)(বি) অনুসারে নেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের আওতায় রয়েছে আশীর্বাদ মাইক্রো ফাইন্যান্স লিমিটেড, অরোহন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, ডিএমআই ফাইন্যান্স প্রাইভেট লিমিটেড, এবং নবি ফিনসার্ভ লিমিটেড।
এই প্রতিষ্ঠানগুলির ঋণ মূল্য নির্ধারণের নীতিমালায় গুরুতর অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। ওয়েটেড অ্যাভারেজ লেন্ডিং রেট (WALR) এবং ইন্টারেস্ট স্প্রেডের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছে আরবিআই। তারা অতিরিক্ত সুদের হার নিচ্ছিল, যা আরবিআই-এর নিয়মিত সীমার বাইরে ছিল।
এই পদক্ষেপের প্রভাব
এই পদক্ষেপের ফলে, আশীর্বাদ মাইক্রো ফাইন্যান্স, অরোহন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, ডিএমআই ফাইন্যান্স, এবং নবি ফিনসার্ভের ব্যবসার ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। এখন তাদের ঋণের মূল্য নির্ধারণের নীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং ঋণগ্রহীতার আয়ের মূল্যায়ন এবং পুনঃপরিশোধের সক্ষমতার ভিত্তিতে ঋণ দিতে হবে।
তবে, এই প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের বিদ্যমান গ্রাহকদের ঋণ সংগ্রহ এবং পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারবে, যদি তা প্রযোজ্য নিয়ম অনুযায়ী করা হয়। আরবিআই জানিয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে নিয়ম মেনে চলার পর আবার ঋণ বিতরণ কাজকর্ম শুরু করতে পারবে।
গ্রাহকদের ওপর প্রভাব
বর্তমান ঋণগ্রহীতাদের ওপর তাৎক্ষণিক বড় কোনো প্রভাব পড়বে না। তাঁরা নিজেদের নিয়মিত ঋণের পরিশোধ চালিয়ে যেতে পারবেন। তবে, নতুন ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পেতে বিলম্ব ঘটবে।
বাজারের প্রতিক্রিয়া
এই পদক্ষেপ বাজারেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিশেষত মনাপ্পুরাম ফাইন্যান্স, যারা আশীর্বাদ মাইক্রো ফাইন্যান্সে বড় অংশীদারিত্ব রাখে, তাদের শেয়ারের উপর প্রভাব পড়েছে।
CLSA, মরগান স্ট্যানলি, এবং জেফারিজ-এর মতো বড় ব্রোকারেজ সংস্থাগুলি মনাপ্পুরামের শেয়ারের মূল্য কমিয়েছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ আয়ের পূর্বাভাসও সংশোধন করেছে।
এনবিএফসিগুলির প্রতিক্রিয়া
এই পদক্ষেপের পর, নবি ফিনসার্ভ এবং আশীর্বাদ মাইক্রোফাইন্যান্স নিয়ম মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, দ্রুত আরবিআই-এর নির্দেশগুলি মান্য করার পদক্ষেপ নিচ্ছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, এই ব্যবসায়িক নিষেধাজ্ঞা তখনই প্রত্যাহার করা হবে যখন এই প্রতিষ্ঠানগুলি নির্দিষ্ট প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রমাণ দিতে পারবে এবং সবসময় নিয়ম মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেখাতে পারবে।