মূল সুদের হার অর্থাৎ রেপো রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৫.৫ শতাংশে নিয়ে এল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। মুদ্রানীতির দ্বিমাসিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে নেওয়া হয়েছে। বৈঠকটি ৪ থেকে ৬ জুন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছিল, নেতৃত্বে ছিলেন আরবিআই গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা।
ঋণগ্রহীতাদের জন্য স্বস্তির খবর
রেপো রেট কমানোর ফলে গৃহঋণ বা দীর্ঘমেয়াদি ঋণের উপর ইএমআই কমতে পারে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের জন্য এটি বড় স্বস্তি।
গভর্নর মালহোত্রা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে অনিশ্চয়তা থাকলেও ভারতের অর্থনীতি দৃঢ় গতিতে এগোচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে, এবং খাদ্য ও মূল উপাদানগুলির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে খুচরো মূল্যস্ফীতি ৩.৭ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যা এপ্রিলের ৪ শতাংশ পূর্বাভাসের তুলনায় কম।
সঞ্চয় ও বিনিয়োগের জন্য ইতিবাচক বার্তা
গভর্নর জানান, শিল্প, পরিষেবা খাত ও গ্রামীণ চাহিদা ক্রমে বাড়ছে, শহরাঞ্চলেও ব্যয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ভান্ডার ৬৯১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা ১১ মাসের আমদানি খরচ বহন করতে সক্ষম।
জিডিপি বৃদ্ধি একই থাকছে
চলতি অর্থবর্ষে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখে ৬.৫ শতাংশই রাখা হয়েছে। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে: এপ্রিল-জুনে ২.৯ শতাংশ, জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৩.৪ শতাংশ, অক্টোবর-ডিসেম্বরে ৩.৯ শতাংশ, জানুয়ারি-মার্চে ৪.৪ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস।
সিআরআর হ্রাস, আরও ছাড়ের সিদ্ধান্ত
সিআরআর বা ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও ১ শতাংশ কমিয়ে আরবিআই জানিয়েছে, ব্যাঙ্কগুলোর জন্য ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা অতিরিক্ত তহবিল উন্মুক্ত হবে।
রিয়েল এস্টেট খাতের জন্য ইতিবাচক প্রভাব
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, রেপো রেট কমানোর ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির হাউসিং সেগমেন্টে আত্মবিশ্বাস বাড়বে, কেনার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে, বিক্রির হারও বাড়বে। ৫০ বেসিস পয়েন্ট রেট কাট প্রকৃত অর্থে ইএমআই কমাবে, যা ক্রেতা ও নির্মাতা—দু’পক্ষের জন্যই ইতিবাচক হবে।
সার্বিকভাবে, রেপো রেট হ্রাস ভারতীয় অর্থনীতিতে খরচ বৃদ্ধি, বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং গৃহঋণগ্রহীতাদের জন্য সহায়ক হতে চলেছে।