সাত মাসে পঞ্চম বার রেপো রেট (Repo Rate) বাড়িয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank)। ফলে আরও বেড়েছে ঋণ নেওয়ার খরচ। আর এর ফলে দেশে বাড়ল ফ্ল্যাট কেনার খরচ। দেশের সাত শহরে সমীক্ষা চালিয়ে এমনটাই জানাচ্ছে উপদেষ্টা সংস্থা জেএলএল ইন্ডিয়া (JLL India)।
কী বলছে সমীক্ষা
কাঁচামাল ও জ্বালানির চড়া দরের জন্য গত বছরের শেষ থেকে আবাসনের দাম বাড়তে শুরু করেছিল। তার উপরে মূল্যবৃদ্ধিকে (Inflation) বাগে আনতে মে মাস থেকে টানা সুদ বাড়াচ্ছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank)। বুধবার আরও এক দফা রেপো রেট (Repo Rate) বাড়িয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে বেড়েছে ঋণ নেওয়ার খরচ। অতিমারির প্রেক্ষিতে ফ্ল্যাট-বাড়ির চাহিদা কমবে না বলে সংশ্লিষ্ট শিল্প মহল দাবি করলেও, ক্রেতার পকেটে চাপ যে বেড়েছে, তা বোঝা যাচ্ছিল। জেএলএল ইন্ডিয়ার (JLL India) সমীক্ষাতেও উঠে এল সেই ছবি। যা বলছে, সস্তা সুদের জমানা শেষে দেশের বড় সাতটি শহরে ফ্ল্যাট কেনার সাধ্য কমেছে মানুষের। তবে এখনও কলকাতার আবাসন ক্ষেত্র ক্রেতাদের সব চেয়ে সাধ্যের মধ্যে, তা-ও স্পষ্ট জানাচ্ছে তাদের সমীক্ষা।
সাধ্য সূচক কী
জেএলএল-এর প্রকাশিত বাড়ি কেনার সাধ্য সূচক একটি শহরে বাজারদর অনুযায়ী কোনও ব্যক্তির গড় বার্ষিক আয়, সেখানে সম্পত্তি কেনার জন্য ঋণ পাওয়ার যোগ্য কি না, তার ইঙ্গিত দেয়। বাজারদরে ১০০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনতে গৃহঋণ পাওয়ার জন্য ক্রেতাকে ন্যূনতম কত টাকা আয় করতে হয়, সেটাকেই ‘যোগ্য আয়’ ধরা হয়। সূচকমূল্য ১০০ ধরে ঋণ মেটাতে যতটা আয় দরকার, ক্রেতা ঠিক ততটাই আয় করেন। তার চেয়ে কম হলে আয় যথেষ্ট নয়।
কলকাতার অবস্থান কী
সেই অনুযায়ী, এ বারের সমীক্ষা বলছে, কলকাতার ক্ষেত্রে বাড়ি কেনার সাধ্য সূচক দাঁড়িয়েছে ১৯৩। বাকি শহরের মধ্যে পুণে (১৮৩), হায়দরাবাদ (১৭৪) বেঙ্গালুরু (১৬৮), চেন্নাই (১৬২) দিল্লি, (১২৫) এবং মুম্বই (৯২)। অর্থাৎ, কলকাতায় ফ্ল্যাট কেনা সব চেয়ে সাধ্যের মধ্যে। আর মুম্বইয়ে ক্রেতার পক্ষে সেই যোগ্যতা অর্জন করা বেশ কঠিন। সবক’টি শহরেরই সাধ্য সূচক অবশ্য কমেছে গত বারের তুলনায়।
জেএলএল-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ তথা গবেষণা শাখার প্রধান স্যমন্তক দাসের বক্তব্য, চড়া দাম এবং আয় বৃদ্ধির গতি কমার জন্য ২০২৩ সালেও সাধ্য সূচক কম থাকারই সম্ভাবনা। তবে তাঁর দাবি, এটি সাময়িক প্রভাব ফেলবে। মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ পড়লে সুদের হার কমার আশা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে কিছুটা সুরাহা পাবেন ক্রেতা।
আরও পড়ুন: এই নিয়ে টানা পঞ্চম বার সুদের হার বাড়াল আরবিআই, বাড়বে ইএমআই