ভারতীয় শেয়ারবাজার গত কয়েক মাস ধরে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েই চলেছে। বিশেষ করে সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসে। উচ্চ মূল্যায়ন, দুর্বল দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (২০২৫ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক) আয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের (FPI) বিক্রির চাপ, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, শক্তিশালী মার্কিন ডলার, এবং চিনের একাধিক প্রণোদনার ঘোষণা—সব মিলিয়ে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এর পাশাপাশি আসন্ন মার্কিন নির্বাচনও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, যার ফলে বাজারের অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে।
অক্টোবর মাসে ভারতীয় বাজারে ৫% পতন দেখা দিয়েছে, যেখানে নিফটি ৫০ সূচক ক্রমবর্ধমান দুর্বলতার মুখোমুখি হচ্ছে। বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি নেতিবাচক প্রবণতা সৃষ্টি করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নিফটি ৫০-এর বর্তমান মূল্যায়ন ২০-২১ গুণ ভবিষ্যৎ আয়ের কাছাকাছি, যা সাধারণের চেয়ে অনেক বেশি। সাম্প্রতিক দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের আয় প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল হওয়ায় শেয়ারের মূল্যায়ন সংশোধনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যার ফলে ৫-১০% পর্যন্ত পতন হতে পারে বলে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
কোটাক ইনস্টিটিউশনাল ইক্যুইটিজের সাম্প্রতিক রিপোর্টে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের দুর্বল আয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিভিন্ন খাতে আয় কম থাকায় এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটায়, ব্রোকারেজ সংস্থা ভবিষ্যতে লাভ ও উৎপাদনের ওপর ঝুঁকি দেখছে।
এছাড়াও, অক্টোবর মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ বাজার থেকে তুলে নিয়েছে, যা এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে বড় মাসিক বিক্রয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ মূল্যায়ন এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ। যদিও, শক্তিশালী দেশীয় বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সহায়ক হয়েছে।
আগামী মাসগুলিতে বিনিয়োগকারীরা বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন এবং দেশীয় আয়ের প্রবণতার উপর গভীরভাবে নজর রাখবেন, যাতে বাজারের দিকনির্দেশ সম্পর্কে সঠিকভাবে ধারণা পাওয়া যাবে।